ব্যান্ডেল চার্চ সম্পর্কে
১৬৬০ সালে নির্মিত, ব্যান্ডেল চার্চ হল পশ্চিমবঙ্গের সর্ব পুরাতন গির্জা। নোসা সেনহোরা রোসারিও অথবা “আওয়ার লেডি অফ হ্যাপি জার্নি”- কে উৎসর্গ করে নির্মিত, এই গির্জা পর্তুগীজ আমলের একটি স্মৃতি-স্মারক। গোমস্ দে সোতো দ্বারা নির্মিত, এটি ১৫৫৯ সালে আশ্রম দ্বার-এর মাধ্যমে তৈরি পুরনো গির্জার এক মূল গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তিনটি পূজাবেদি, কয়েকটি সমাধি পাথর এবং একটি ছোট অঙ্গ নিয়ে এই গির্জা গঠিত। এটি পশ্চিম বঙ্গের এক অন্যতম ঐতিহাসিক গির্জা এবং চিত্তবিনোদন ও প্রার্থনার জন্য একটি আদর্শ স্থান।
ইতিহাস
ব্যান্ডেল চার্চের অস্তিত্বের সাথে পর্তুগীজ সংযোগ লক্ষ্য করা যায়। এই রাজ্যে ভাস্কো দা গামা আসার প্রায় এক শতক পর হুগলী নদীর তীরে এই গির্জা নির্মিত হয়। মুঘল সম্রাট শাহজাহান ১৬৩২ সালে পর্তুগীজদের আক্রমণ করেন ফলে পর্তুগীজ আমলের বহু গির্জা ও দুর্গের পতন ঘটে। পর্তুগীজদের উপর আক্রমন বিভিন্ন বিস্ময়ের সাক্ষী স্বরূপ, যা অনেক মানুষের জীবন রক্ষা করে এবং মুঘল সম্রাটকে প্রভাবিত করে। একটি ঘটনায় জানা যায় যে, একদা এক পর্তুগীজ জাহাজ ঝড়ের সম্মুখীন হয়, এবং জাহাজটির অধিনায়ক অঙ্গীকার করেন যে সবার প্রথম তিনি যেই গির্জাটি দেখবেন, সেই গির্জায় তিনি জাহাজের প্রধান মাস্তুলটি দান করবেন। “ব্যান্ডেল” হল পর্তুগীজ শব্দ যার অর্থ মাস্তুল, এবং এই পর্তুগীজ অধিনায়ক এই পুরাতন গির্জার নাম দেন “ব্যান্ডেল চার্চ”।
অবস্থান
এই গির্জা হুগলী নদীর তীরে কলকাতা থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এটি ব্যান্ডেল থেকে ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
ব্যান্ডেল পৌঁছনোর পদ্ধতি
পরিবহনের বিভিন্ন মাধ্যম দ্বারা এই গির্জায় পৌঁছনো সম্ভব।
রেলপথ মাধ্যমে :
ব্যান্ডেল এ দুটি স্টেশন আছে যথা – হুগলী রেল স্টেশন ও ব্যান্ডেল জংশন। এক অন্যতম রেল স্টেশন – ব্যান্ডেল জংশন, হাওড়া স্টেশন এর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
বিমানপথ মাধ্যমে :
ব্যান্ডেলে কোন বিমান বন্দর নেই এবং এখান থেকে নিকটবর্তী বিমান বন্দরটি হল – নেতাজী সুভাষচন্দ্র বিমান বন্দর।
সড়কপথ মাধ্যমে :
কলকাতা শহরের ন্যায়, ব্যান্ডেলে অটো-রিক্সা খুব সহজেই পাওয়া যায়। এছাড়াও গির্জায় পৌঁছনোর জন্য রাস্তায় বাস, ট্যাক্সি, রিক্সাও পাওয়া যায়।