আর্মেনিয়ান চার্চ, কলকাতা
কলকাতার আর্মেনিয়ান চার্চ, কলকাতায় হাওড়া ব্রিজের সন্নিকটে, বড়বাজারের উত্তর-পশ্চিম কোণে, আর্মেনিয়ান স্ট্রীটে অবস্থিত।
১৭৬৪ সালে নির্মিত ও অষ্টাদশ শতাব্দীর শুরুতে পরিকল্পিত, কলকাতার আর্মেনিয়ান চার্চ হল বর্তমানে কলকাতার সবচেয়ে প্রাচীন গির্জা। কলকাতার আর্মেনিয়ান চার্চের অভ্যন্তরীণ দেয়ালগুলি মার্বেল দ্বারা সুসজ্জিত এবং গ্যালারির আচ্ছাদনে মূরাল ট্যাবলেট রয়েছে। যীশু খ্রীষ্ট ও তাঁর দ্বাদশ শিষ্যের উদ্দেশ্যে একটি বেদিতে একটি ক্রূশ, খ্রীষ্টের উপদেশাবলী ও ১২-টি মোমবাতি পেশ করা হয়েছে। ইংরেজ চিত্রকার এই হ্যারিসের দ্বারা অঙ্কিত “দ্য হোলি ট্রিনিটি”, “দ্য লাস্ট সাপার” এবং “দ্য এনস্রাউডিং অফ আওয়ার লর্ড”- এই তিনটি তৈল চিত্র, বেদিটির মহিমাকে আরোও বৃ্দ্ধি করেছে। এই গির্জার প্রাঙ্গণে আর্মেনিয়ান কবরস্থানের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে।
আর্মেনিয়ানরা প্রাচীণকাল থেকেই ভারতে বসবাস করত। আর্মেনিয়ানরা, ব্রিটিশদেরও আগে ভারতে এসেছিল বলে তারা দাবী করে। তারা ইউরোপীয় মহাদেশে খ্রীষ্টীয়করণেও অগ্রদূত ছিলেন বলে দাবী করা হয়। ১৬৮৮ সালের ২২-শে জুন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ইউরোপে আর্মেনিয়ানদের সঙ্গে একটি সমঝোতার স্মারকলিপি বা সন্ধিতে স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তি অনুসারে, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতের যে কোনও জায়গায় গির্জা নির্মাণ করার অনুমিত দেয়, তবে সেখানে কমপক্ষে অন্তত ৪০-জন আর্মেনিয়ানদের বসবাস করতে হবে। পূর্বতন যাজকের পারিশ্রমিক হিসেবে যাজককে ৫০ পাউন্ড দেওয়ার অনুমিত দেয়।
১৬৯০ সলে জব চার্ণক, কলকাতায় তাঁর শেষ দর্শন দেন। তার ১৭ বছর পরে, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বর্তমান আর্মেনিয়ান চার্চের দক্ষিণ-পূর্ব অংশে একটি ছোট কাঠের গির্জা নির্মাণ করেছিলেন।
১৭৩৪ সালে, আগা মামেদ হাজার মালিয়ার দ্বারা কলকাতার এই বর্তমান আর্মেনিয়ান চার্চ নির্মাণ করা হয়েছিল। গির্জার অভ্যন্তরীণ অলঙ্করণ করেছিলেন কাটচিক্ অরফিয়েল। তিনি যাজকদের বাসস্থানের জন্য আবাস নির্মাণ করেছিলেন এবং কবরস্থানের পাশে উচুঁ প্রাচীর তৈরি করেছিলেন। তিনি অভিজাত গির্জার ঘড়িটির অনুদানী ছিলেন।
* সর্বশেষ সংযোজন : ২৭ - শে মার্চ, ২০১৫