২০১৪ সালে মোদির দ্বারা প্রবর্তিত সেরা পাঁচটি কর্মসূচি

July 9, 2015

২০১৪ সালে মোদির দ্বারা প্রবর্তিত সেরা পাঁচটি কর্মসূচি

২০১৪ সালের ২৬-শে মে আমাদের প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারত সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর দায়িত্ব গ্রহণের সময় থেকেই মন্ত্রীপরিষদ কর্তৃক বেশ কিছু নির্দিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ২০১৪ সালের অন্তিম লগ্নে এসে সেইসব গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি ও প্রকল্পগুলির পুর্নস্মরণ করা যাক, যা আমাদের নতুন সরকার এই বছর দেশের উন্নয়ন ও কল্যাণের জন্য ঘোষণা করেছেন।

    • ডিজিটাল ভারত

২০১৪ সালের ২১-শে আগস্ট “ডিজিটাল ইন্ডিয়া” বা “আধুনিক ভারত” অভিযান শুরু হয়। উদ্দেশ্য হল এক বৈদ্যূতিন ক্ষমতাপ্রাপ্ত অর্থনীতির মধ্যে ভারতকে পরিবর্তিত করা। এই কর্মসূচি অনুযায়ী, ভারত সরকার, সমস্ত সরকারি দপ্তর ও ভারতের সমস্ত মানুষকে, ডিজিটালি বা বৈদ্যূতিনভাবে একে অপরের সঙ্গে সু-সংযুক্ত করতে চায়, যাতে একটি কার্যকরী সরকার গড়ে ওঠে। এর লক্ষ্য হল সমস্ত মানুষকে বৈদ্যূতিনভাবে সমস্ত সরকারি পরিষেবা উপলব্ধির আওতায় এনে কাগজপত্রের কাজকর্মের হ্রাস করা। আরেকটি পরিকল্পনা হল সমস্ত গ্রাম ও গ্রামাঞ্চলগুলিকে ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে সংযুক্ত করা।

এখানে ডিজিটাল ভারতের তিনটি প্রধান উপাদান রয়েছে : সেগুলি হল ডিজিটাল ইনফ্রাস্ট্র্যাকচার (ডিজিটাল পরিকাঠামো), ডিজিটাল লিট্যারেসি (ডিজিটাল সাক্ষরতা) এবং ডিজিটাল ডেলিভারী (ডিজিটাল সরবরাহ)। সরকার এই প্রকল্পকে পাঁচ বছরের মধ্যে বাস্তবায়িত করবেন বলে পরিকল্পনা করেছেন। সুতরাং, ২০১৯ সালের মধ্যে, ডিজিটাল ভারত প্রকল্প সম্পূর্ণরূপে কার্যকরী হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

    • প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা

২০১৪ সালের ২৮-শে আগস্ট, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা চালু করেন। ২০১৪ সালের ১৫-ই আগস্ট, যখন তিনি স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে তাঁর প্রথম বক্তৃতা দেন তখন এই পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন। এটি একটি মর্যাদাপূর্ণ আর্থিক অন্তর্ভূক্তি কর্মসূচি। এই কর্মসূচি প্রবর্তনের প্রথম দিনই, দেড় কোটি ব্যাংক আ্যকাউন্ট খোলা হয়েছিল এবং প্রতিটি আ্যকাউন্ট ধারক ব্যাক্তিকে ১,০০,০০০/- টাকার বীমা পরিষেবা প্রদান করা হয়। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে, ৩.০২ কোটি আ্যকাউন্ট খোলা হয় এবং প্রায় ১,৫০০ কোটি টাকা জমা হয়েছিল। এই যোজনা অনুযায়ী, যে কেউ বিনা জমাখরচে (জিরো ব্যালেন্স) নতুন ব্যাংক আ্যকাউন্ট খুলতে পারেন।

    • স্বচ্ছ ভারত অভিযান

২০১৪ সালের ২৪-শে সেপ্টেম্বর, প্রধানমন্ত্রী স্বচ্ছ ভারত অভিযানকে অনুমোদিত করেন, যা পূ্র্ববর্তী সরকার দ্বারা প্রবর্তিত নির্মল ভারত কর্মসূচির একটি পরিবর্তিত রূপ। স্বচ্ছ ভরত অভিযান, ২০১৪ সালের ২-রা অক্টোবর, মহাত্মা গান্ধীর জন্ম বার্ষিকীর দিনে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়। যার মূল উদ্দেশ্য হল ২০১৯ সালে, মহাত্মা গান্ধীর ১৫০-তম জন্ম বার্ষিকীর মধ্যে এক স্বচ্ছ-পরিচ্ছন্ন ভারতবর্ষে গড়ে তোলা। পরিকল্পনাটি হল সমস্ত গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে জঞ্জাল সাফাই ও শৌচালয় প্রদান করা, পরি্ছন্নতার জন্য জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলা, রাস্তা, সড়ক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, অনধিকার দখল মুক্ত করা এবং ভারতবর্ষকে বিশ্বের এক অন্যতম পরিচ্ছন্ন দেশ হিসাবে গড়ে তোলা।

    • ভারত নির্মাণ

২০১৪ সালের ২৫-শে সেপ্টেম্বর, নরেন্দ্র মোদির দ্বারা উদ্ভাবিত, ভারতে বিনিয়োগ ও উৎপাদনে বিশ্ব জগতকে আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে এটি মূলত একটি স্লোগান ছিল। পরবর্তীকালে এটি একটি আন্তর্জাতিক বিপণন প্রচারাভিযান হয়ে ওঠে। “মেক ইন ইন্ডিয়া” বা “ভারত নির্মাণ” অভিযান যে উদ্দেশ্যে প্রবর্তিত হয়েছিল, যাতে ভারতে যথেষ্ট কাজের সুযোগ গড়ে ওঠে ও অর্থনীতীর উন্নতিসাধনে সাহায্য করে। “ভারত নির্মাণ” অভিযান হল ভারতবর্ষকে এক আত্মনির্ভরশীল দেশ হিসাবে গড়ে তোলার জন্য উপায় অনুসন্ধান করা। এর আরেকটি উদ্দেশ্য হল দেশে এফ.ডি.আই-কে মঞ্জুর করা এবং পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত সরকারি সংস্থাগুলির দৃঢ়তা ফিরিয়ে নিয়ে আসা। “ভারত নির্মাণ” অভিযানটি সম্পূর্ণরূপে কেন্দ্রীয় সরকারের আওতায় রয়েছে, যার মধ্যে সরকার ২৫-টি মূখ্য ক্ষেত্র বা বিভাগকে চিহ্নিত করেছে যেগুলির বিশ্বে অগ্রণী হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।

    • সংসদ আদর্শ গ্রাম যোজনা

২০১৪ সালের ১১-ই অক্টোবর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, সংসদ আদর্শ গ্রাম যোজনা চালু করেন। এই যোজনা অনুযায়ী, প্রতিটি এম.পি (সাংসদ) ২০১৯ সালের মধ্যে তিনটি করে গ্রামের উন্নয়নের দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন। এর অভিপ্রায় হল ভারতের গ্রামগুলিকে ভৌগোলিক ও প্রাতিষ্ঠানিক পরিকাঠামোর দিক দিয়ে সম্পৃর্ণরূপে সার্বিক উন্নত করে তোলা। এই প্রকল্পের জন্য নির্দিষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে, যা গ্রামীণ উন্নয়ন অধিদপ্তর কর্তৃক প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ২০১৪ সালের ১১-ই অক্টোবর, এই নির্দেশিকাগুলি উন্মোচিত করেন এবং সমস্ত এম.পি (সাংসদ)-দেরকে ২০১৬ সালের মধ্যে তাদের নির্বাচনক্ষেত্রের মধ্যে একটি করে মডেল গ্রামের বিকাশের জন্য এবং ২০১৯ সালের মধ্যে আরোও দুটি করে গ্রামোন্নয়নের সম্পূর্ণ বিকাশের জন্য অনুরোধ করেন।

মোদির দ্বারা প্রবর্তিত আরোও কর্মসূচি

More articles from :
Comments

(required)