জলপাইগুড়ি জেলা – পশ্চিমবঙ্গ
ভারতের, পশ্চিমবঙ্গের একটি জেলা জলপাইগুড়ি তার চা চাষ এবং বন্য প্রাণী সমৃদ্ধ ঘন বনাঞ্চলের জন্য সুপরিচিত। হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত, এই জেলার একটি বিরাট পর্যটন তাৎপর্য রয়েছে যার অর্থ হল এই জেলা সমৃদ্ধ উদ্ভিদকুল ও প্রাণিকুল দ্বারা ও সুন্দর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ। এটি ৬,২৪৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে।
জলপাইগুড়ির অবস্থান
জলপাইগুড়ি ২৬ ডিগ্রী ৩২ মিনিট উত্তর এবং ৮৮ ডিগ্রী ৪৬ মিনিট পূর্বের মধ্যে অবস্থিত। এটি পশ্চিম বঙ্গের উত্তরে অবস্থিত এবং দক্ষিণ ও উত্তরে অবস্থিত দেশ যথাক্রমে বাংলাদেশ ও ভুটানের সাথে তার সীমানা ভাগ করে নিয়েছে। পূর্বে আসাম ও দার্জিলিং-এর পাহাড় পশ্চিমে এবং উত্তর-পশ্চিমে আরও প্রসারিত হয়েছে। এই জেলার ভূসংস্থান পাহাড়, নদী ও ঝরনা দ্বারা গঠিত। আপনি এখানে যে প্রধান নদী গুলি দেখতে পাবেন সেগুলি হল – তিস্তা নদী, জলঢাকা নদী, তোর্সা নদী, নেওরা, ডায়না ইত্যাদি।
জলপাইগুড়িতে সড়ক ও রেলপথের একটি ভালো জালবিন্যাস রয়েছে। এই অঞ্চলে পরিবহনের একটি ভাল সুযোগ রয়েছে। জলপাইগুড়ি ৩১-নং জাতীয় সড়ক এবং তার পাশাপাশি ৩০-নং জাতীয় সড়ক এই জেলার মধ্য দিয়ে চলমান। এই জাতীয় মহাসড়কগুলি রাজ্য ও দেশের অন্যান্য অংশের সাথে সুসংযুক্ত। প্রধান সড়কগুলি যেই শহরগুলির সাথে সুসংযুক্ত সেগুলি হল – আলিপুরদুয়ার, কালচিনি, মাদারি হাট, বীরপাড়া, বানারহাট, ময়নাগুড়ি, ধুপগুড়ি, রাজগঞ্জ, মাটিয়ালি এবং মাল।
প্রধান রেলওয়ে জংশন হল নিউ জলপাইগুড়ি, এই শহর থেকে ৪০ কি.মি দূরে অবস্থিত। অন্যান্য কয়েকটি রেল স্টেশন হল – জলপাইগুড়ি রোড এবং জলপাইগুড়ি, যা দেশের বাকি অংশের সঙ্গে মানুষের সংযোগ স্থাপন করতে সহায়তা করে। অধিকাংশ উত্তর-পূর্ব ট্রেন জলপাইগুড়ি রোডের মধ্য দিয়ে যায়।
জলপাইগুড়ির সংক্ষিপ্তসার
২০১১ সালে জলপাইগুড়ির জনসংখ্যা হল ৩,৪০৩,২০৪ জন এবং প্রতি বর্গ কিমি গড় জনঘনত্ব হল ৫৪৭ জন। এর মধ্যে ২০১১ সালের পুরুষ জনসংখ্যা হল ১,৭৫৩,২৭৮ জন এবং নারী জনসংখ্যা হল ১,৬৪৯,৯২৬ জন। এটি মূলত একটি গ্রামীণ জেলা, যেই গ্রামগুলিতে বৃহৎ সংখ্যক মানুষ বসবাস করে। ২০০১ সালে তথ্য অনুসারে প্রায় ১.৮৩৯.০৩৬ জন মানুষ সাক্ষর।
চা চাষ এখানকার একটি প্রধান শিল্প। তবে, এই জেলা কৃষিভিত্তিক এবং এখানকার অধিকাংশ মানুষই কৃষিক্ষেত্রে নিযুক্ত। এছাড়াও এই জেলার কাঠ বিখ্যাত এবং বর্তমানে অনেক কাষ্ঠ শিল্পের উন্নতি হচ্ছে। পর্যটন, মোটামুটি এক নতুন শিল্প যার বর্তমানে এবং ভবিষ্যতে বেড়ে ওঠার মহান সম্ভাবনা রয়েছে। এটা বিভিন্ন উদ্ভিদকুল ও প্রাণিকুলের সমন্বয়ে গঠিত এবং দেশের মধ্যে এবং বাইরের বহু পর্যটকদের আকর্ষণ করে। এখানকার গুরুত্বপূর্ণ আকর্ষণ হল – অভয়ারণ্য, জাতীয় উদ্যান এবং ব্যঘ্র সংরক্ষন। দর্শকরা এখানে গণ্ডার, চিতাবাঘ, গৌর ও হাতি দেখার একটি বিশাল সুযোগ পেতে পারেন।
জলপাইগুড়ি জেলা তথ্য | |
---|---|
রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ |
ক্রমিক সংখ্যা | 9 |
জেলা | জলপাইগুড়ি |
জেলা সদর দপ্তর | জলপাইগুড়ি |
জনসংখ্যা (2011) | 3872846 |
বৃদ্ধি | 13.87% |
প্রতি 1000 পুরুষে মহিলার সংখ্যা | 953 |
সাক্ষরতা | 73.25 |
আয়তন (বর্গ কিলোমিটার) | 6227 |
ঘনত্ব (/বর্গ কিলোমিটার) | 621 |
তালুকসমূহ | নাগরাকাটা, ধূপগুড়ি, মেখলিগঞ্জ, ময়নাগুড়ি, মাল, ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি, জলপাইগুড়ি, রাজগঞ্জ |
লোকসভা নির্বাচন ক্ষেত্র | জলপাইগুড়ি (এস.সি) |
বিধানসভা নির্বাচন ক্ষেত্র | ধূপগুড়ি, ময়নাগুড়ি, জলপাইগুড়ি, রাজগঞ্জ, ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি, মাল, নাগরাকাটা |
ভাষা | বাংলা, হিন্দি, নেপালি, বিজোরি-এ মূন্ডা |
নদীসমূহ | তিস্তা, তোর্সা, জলঢাকা, রায়ডাক, ডায়না, নেওরা, সঙ্কোশ |
অক্ষ-দ্রাঘিমাংশ | 26.70636,89.015922 |
পর্যটন স্থল | গরুমারা জাতীয় উদ্যান, লাটাগুড়ি, চাঁপরামারি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, চালসা, জলদাপাড়া, হলং, মাদারিহাট, বক্সা ব্যাঘ্র সংরক্ষণ, জটিলেশ্বর মন্দির, ভামোরি দেবী মন্দির, ভবানী পাঠক মন্দির, দেবী চৌধূরানী মন্দির, জলপেশ মন্দির |
সরকারি মহাবিদ্যালয়/বিশ্ববিদ্যালয় | আনন্দ চন্দ্র মহাবিদ্যালয়, আনন্দ চন্দ্র কলেজ অফ কমার্স, পি.ডি ওমেন্স কলেজ, এ.সি ট্রেনিং, আলিপুরদুয়ার মহাবিদ্যালয়, বিবেকানন্দ মহাবিদ্যালয়, সুকান্ত মহাবিদ্যালয়, ফালকাটা মহাবিদ্যালয়, পরিমল মিত্র স্মৃতি মহাবিদ্যালয়, জলপাইগুড়ি আইন মহাবিদ্যালয়, বীরপাড়া মহাবিদ্যালয়, শহীদ ক্ষুদিরাম মহাবিদ্যালয়, ননী ভট্টাচার্য্য স্মারক মহাবিদ্যালয়, ময়নাগুড়ি মহাবিদ্যালয়, নর্থ বেঙ্গল সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ ইত্যাদি। |