পশ্চিম বঙ্গ
ভারতের বিভিন্ন মানচিত্র

শিলিগুড়ি শহর মানচিত্র

Siliguri City Map in Bengali

শিলিগুড়ি শহর

শিলিগুড়ি, পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলায়, ২৬ ডিগ্রী ৪২ মিনিট উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৮ ডিগ্রী ২৫ মিনিট পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্য অবস্থিত। রাজ্যের উত্তরে হিমালয় পর্বতমালার পাদদেশে, মহানন্দা নদীর তীরে অবস্থিত, ৪৮.৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এই শহরটি বিস্তৃত। নদীটি শহরের কেন্দ্র দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে এবং দুটি ভাগ ভাগ হয়ে গেছে। শিলিগুড়িতে ৩৫ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড গড় তাপমাত্রা সহ উষ্ণ গ্রীষ্মকাল ও ১০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা সহ শীতল শীতকাল রয়েছে। শীতকালের সময়ে তাপমাত্রা ২ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেডেও নেমে যায়। বর্ষার মাসগুলিতে এই শহর প্রচুর বৃষ্টিপাত পায় এবং কখনও কখনও রাজ্যের উচ্চতর অঞ্চলগুলির সঙ্গে যোগযোগও বন্ধ হয়ে যায়।

যেহেতু শহরটি সংকীর্ণ শিলিগুড়ি প্রাঙ্গনে বা বিচ্যূত ভূমিতে অবস্থিত হওয়ায় ভারত, উত্তর পূর্বীয় রাজ্যগুলির সঙ্গে যুক্ত হতে পেরেছে, এটি উত্তর পূর্বাঞ্চলের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন কেন্দ্রস্থল। ৩১-নং জাতীয় সড়ক, শহরের পশ্চিমদিক দিয়ে অতিক্রান্ত হয়েছে এবং এটি ঝুমরিতালাইয়া, কোডার্মা, বিহার শরিফ, বিহরের ঢাখোলা এবং পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে সংযোগ স্থাপণ করে, পরে কোকরাঝাড়, নলবাড়ি হয়ে গুয়াহাটিতে শেষ হয়েছে। এটি এই অঞ্চলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক হিসাবে উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিকে সু-সংযুক্ত করেছে এবং যেহেতু এটি শিলিগুড়ির মাধ্যমে অতিক্রম করেছে, তাই এই শহরটি উত্তর-পূর্বের প্রবেশ-দ্বার হিসাবেও অভিহিত হয়।

শিলিগুড়ি, ভারতীয় রেলের উত্তর-পূর্ব সীমান্ত অঞ্চলের মধ্যে পড়ে এবং এখানে মিটার গজ সংযোগ ও পাশাপাশি সংকীর্ণ গজ রেল লাইনও রয়েছে। এই সংকীর্ণ গজ রেল লাইনটি রয়েছে ঐতিহ্যপূর্ণ দার্জিলিং হিমালয় রেলপথের সঙ্গে দার্জিলিং শহরের সংযোগ স্থাপনের জন্য। রেল লাইনটি শহরের মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত হয়েছে এবং এর দুইটি গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে স্টেশন রয়েছে। একটি শিলিগুড়ি জংশন ও অন্য আরেকটি শিলিগুড়ি শহরে অবস্থিত। মিটার গজ রেল লাইনটি শিলিগুড়িকে দিল্লীর পাশাপাশি, আসামের ডিব্রুগড় ও গুয়াহাটির সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। এই শহরের একমাত্র বিমানবন্দরটি বাগডোগরা অঞ্চলে রয়েছে, যা এই শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

বর্তমানে শিলিগুড়ি, এই অঞ্চলের এক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাগত ও ব্যবসায়িক কেন্দ্র এবং পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর হিসাবে গড়ে উঠেছে। শহরের জনসংখ্যা মূলত বাঙালি, তবে প্রতিবেশী রাজ্য বিহার এবং উত্তর-পূর্বীয় দেশ নেপাল ও বাংলাদেশ থেকে আগত অভিবাসীরাও এই শহরের জনসংখ্যার সাথে যুক্ত রয়েছে। এখানকার জনবসতিপূর্ণ অঞ্চলগুলি হল গুরুং বস্তি, বাবুপাড়া, রবীন্দ্র নগর, হাকিম পাড়া, হালদার পাড়া, ডন বস্কো কলোনি, প্রকাশ নগর ও সুভাষ পল্লী। এই শহরে বেশ কিছু ব্যবসায়িক কার্যালয়ও রয়েছে; যেমন – ভারতের খাদ্য নিগম্ (দ্য ফুড কর্পোরেশন্ অফ ইন্ডিয়া), ইন্ডিয়্যান অয়েল কর্পোরেশন্, আ্যক্সিস ব্যাংক, দূর্গা হুন্ডাই এবং প্রকাশ ডিসটিল্যারী।

শিলিগুড়িতে, রাজ্যের এক সর্বোচ্চ সাক্ষরতার হার রয়েছে এবং এখানে বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। শহরটি শুধুমাত্র এই রাজ্যের মানুষকেই নয়, এমনকি সিকিম, বিহার, আসামের মতো প্রতিবেশী রাজ্যগুলি থেকে আগত মানুষদেরও যোগান দেয়। শিক্ষার মাধ্যমের ভিন্নতা রয়েছে – বাংলা, ইংরাজি, এর সঙ্গে রয়েছে নেপালি ও হিন্দি।

বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি হল –

  • শ্রীগুরু বিদ্যা মন্দির উচ্চ বিদ্যালয়।
  • মার্গারেট এস.এন ইংরাজি বিদ্যালয়।
  • ভারতী হিন্দি বিদ্যালয়
  • সেন্ট জেমস উচ্চ বিদ্যালয়
  • বাল্মীকি বিদ্যাপীঠ
  • গোঘুমালি উচ্চ বিদ্যালয়
  • সূর্য সেন মহাবিদ্যালয়
  • নান্টুর মোনালিসা আর্ট বিদ্যালয়



এই শহরের গুরুত্বপূর্ণ বিশিষ্ট স্থানগুলির মধ্যে রয়েছে –

  • শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত হংকং মার্কেট
  • কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম
  • সিটি গার্ডেন্
  • বঙ্গ ভবন
  • ৩১-নং জাতীয় সড়কের নিকটে অবস্থিত সার্কিট হাউস্
  • দাদা ভাই স্পোর্টিং গ্রাউন্ড
  • রাধা গোবিন্দ মন্দির
  • দাগাপুর লোকনাথ মন্দির।


  • * সর্বশেষ সংযোজন : ২১ - শে এপ্রিল, ২০১৫