চন্ডীগড় পর্যটন

Travel to Chandigarh in Bengali

চন্ডীগড় পর্যটন

শিবালিক পর্বতমালা দ্বারা বেষ্টিত চিত্রবৎ উপত্যকায় এই শহরটি অবস্থিত। চন্ডীগড়ের একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হল যে এটি ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় দুই রাজ্য – পাঞ্জাব ও হরিয়ানা, উভয়ের যমজ রাজধানী হিসাবে কাজ করে, কিন্তু তাদের সাথে সংযুক্ত নয়। এটি একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, সরাসরি ভারত সরকারের প্রশাসনের অধীন।
চন্ডীগড় নামটি, শক্তির দেবী শ্রী চন্ডিকার নাম থেকে উৎপত্তি হয়েছে, যাঁর মন্দির শহরটির উত্তর-পূর্ব দিকে অবস্থিত।
এটির উদ্ভবের পিছনে আধুনিক স্থাপত্যের ইতিহাসে একটি মহীয়ান্ সাফল্যের কাহিনী রয়েছে। প্রথম শহরটির পরিকল্পনা যাদের, আ্যলবার্ট মেয়্যার ও ম্যাথউ নোভিস্কি-র একটি বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পর কাজটি বিশিষ্ট ফরাসি স্থপতি ল্যে কোর্বূসায়েরকে দেওয়া হয়েছিল, যিনি অবশেষে এই শহরের পরিপূর্ণতার পরিকল্পনা করেন।
এটি এশিয়া তথা বিশ্বের সবচেয়ে এক অন্যতম সুন্দর ও আরামদায়ক শহর; যথাযোগ্যভাবেই বহু-ব্যবহৃত ‘দ্য সিটি বিউটিফুল’ বা ‘সুন্দর শহর’ উপাধিটি যথাযোগ্য।

সারা বিশ্ব থেকে মানুষেরা তার স্থাপত্যের বিস্ময়তা দেখার জন্য, একটি মরুভূমির মাঝে মানুষের সৃষ্টির সাক্ষী হতে এখানে ভ্রমণ করতে আসে।

জনপরিসংখ্যান
অবস্থান উত্তর ভারতে, উত্তর ও পশ্চিমে পাঞ্জাব এবং পূর্ব ও দক্ষিণ দিকে হরিয়ানা
অক্ষাংশ 76 ডিগ্রী 42 মিনিট থেকে 76 ডিগ্রী 51 মিনিট উত্তর
দ্রাঘিমাংশ 30 ডিগ্রী 40 মিনিট থেকে 30 ডিগ্রী 46 মিনিট পূর্ব
আয়তন 114 বর্গ কিলোমিটার
জলবায়ু উষ্ণ গ্রীষ্মকাল ও শীতল শীতকাল সহ ক্রান্তীয় জলবায়ু
সর্বোচ্চ তাপমাত্রা 28 – 38 ডিগ্রী সেলসিয়াস
সর্বনিম্ন তাপমাত্রা 7 – 22 ডিগ্রী সেলসিয়াস
বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত 70 মিলিমিটার
রাজধানী চন্ডীগড়
জনসংখ্যা 900914
ভাষা হিন্দি, পাঞ্জাবি, ইংরাজী
ধর্ম হিন্দু, ইসলাম, খ্রীষ্টান, শিখ, বৌদ্ধ এবং অন্যান্য
পরিদর্শনের সেরা সময় অক্টোবর থেকে মার্চ
পরিধান গ্রীষ্মকালে – হালকা সূতি, শীতকালে – ভারী পশম

চন্ডীগড়ে পৌঁছানোর উপায়

এই সুন্দর শহরটি, দুটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য পাঞ্জাব ও হরিয়ানার রাজধানী হিসাবে কাজ করে। প্রতিদিন, প্রচুর মানুষ দেশের অন্যান্য অংশ থেকে চন্ডীগড়ে আসা-যাওয়া করে। এছাড়াও এটি ভারতের এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক শহর। এটি স্বাভাবিকভাবেই অভ্যন্তরীণ উপযুক্ত যোগাযোগের সংযোগ প্রতিষ্ঠার নেতৃত্ব দেয়।
এটি দেশের বাকি অংশের সাথে বিমান, সড়ক ও রেল মাধ্যম দ্বারা সুবিধাজনকভাবে সু-সংযুক্ত রয়েছে এবং নীচে চন্ডীগড়ে কিভাবে পৌঁছানো যেতে পারে তার উপর বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।

বিমান মাধ্যমে

চন্ডীগড়ে একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রয়েছে যা সিটি সেন্টার থেকে মাত্র ১১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ইন্ডিয়্যান এয়্যারলাইনস এই শহরটিকে অন্যান্য প্রধান প্রধান শহর যেমন – মুম্বাই, দিল্লী, জম্মু ও অমৃতসর এর সাথে সংযুক্ত করেছে।

রেলপথ মাধ্যমে

রেলপথ সংযোগ শহরটিকে সুবিধাজনক পরিষেবা প্রদান করেছে। চন্ডীগড় রেলওয়ে স্টেশন, সিটি সেন্টার থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। গুরুত্বপূর্ণ রেলসমূহ যেমন শতাব্দী এক্সপ্রেস এবং হিমালয়ান কুইন্ সার্ভিস, নিয়মিত ভিত্তিতে চন্ডীগড়কে শহরের অন্যান্য অংশের সাথে সংযুক্ত রেখেছে।

সড়ক মাধ্যমে

শহরটি এক উন্নত সড়ক-সংযোগে গর্বিত রয়েছে। তাছাড়াও এটি উত্তর ভারতের বেশ কিছু প্রধান শহরগুলির সঙ্গে মোটরপোযোগী দূরত্বের মধ্যে সুবিধাজনক অবস্থানে অবস্থিত। এই শহরের মধ্যে দিয়ে অতিক্রান্ত ২১-নং ও ২২-নং জাতীয় সড়ক দেশের বিভিন্ন রাজ্য ও প্রধান প্রধান শহরগুলির সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে। উপযুক্ত সড়ক ব্যবস্থা ও সড়কের উভয় পাশের সুন্দর দৃশ্যাবলী একটি মনোরম ড্রাইভ নিবেদন করে।

চন্ডীগড় পর্যন্ত দূরত্ব

  • দিল্লী থেকে – ২৩৮ কিলোমিটার
  • জম্মু থেকে – ৩৫৩ কিলোমিটার
  • সিমলা থেকে – ১১৯ কিলোমিটার
  • অমৃতসর থেকে – ২১৭ কিলোমিটার
  • দেরাদূন থেকে – ১৭৫ কিলোমিটার
  • আম্বালা থেকে – ৪৬ কিলোমিটার
  • আহমেদাবাদ থেকে – ১১৫৩ কিলোমিটার
  • জয়পুর থেকে – ৪৯৬ কিলোমিটার

চন্ডীগড়ে দর্শনীয় স্থান

চন্ডীগড়ে বেশ ভালো সংখ্যায় প্রধান প্রধান পর্যটন স্থল রয়েছে। এই শহরটি ফরাসি স্থপতি ল্যে কোর্বূসায়ের দ্বারা পরিকল্পিত। প্রতি বছর সারা দেশ থেকে পর্যটকেরা এই সু-পরিকল্পিত শহরের পরিদর্শনে আসে। চন্ডীগড় পর্যটন খুবই সতেজ ও সমৃদ্ধশালী ছুটি উপভোগ করতে আপনাকে প্রদর্শিত করতে পারে। চন্ডীগড় সফরের জন্য সেরা সময় হল আগস্টের মাঝামাঝি থেকে নভেম্বর – শরৎকালের সময়, এই সময় এখানে মনোরম জলবায়ু অনুভূত হয়।
চন্ডীগড়, স্বাধীনতার পরবর্তীকালে নির্মিত ও পরিকল্পিত ভারতের এক অত্যাধুনিক ও অন্যতম কনিষ্ঠ শহর। চন্ডীগড়ের পর্যটন আকর্ষণে প্রাচীন ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভ নেই। চন্ডীগড় তার অত্যাশ্চর্য স্থাপত্য ও প্রাকৃতিক ভূ-দৃশ্যে গর্বিত রয়েছে; যা নিঃসন্দেহে দৃষ্টি আকর্ষণকারী। আধুনিক স্থাপত্যের প্রতিভা চন্ডীগড়ে বেশ কয়েকটি পর্যটন গন্তব্যস্থলের সৃষ্টি করেছে।
চন্ডীগড়, শিবালিক পর্বতমালার পাদদেশে নির্লিপ্তভাবে দাঁড়িয়ে থাকা সবুজাভ আবরণে আবৃত ভূ-প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং সারিবদ্ধ বৃক্ষের বীথিকা, ঝরঝরে ঋজুরেখ জনমানব অধ্যূষিত আবাস-নিকেতনকে অভিনন্দন জানায়।

চন্ডীগড়ের পরিদর্শনযোগ্য স্থান

চন্ডীগড়ে পরিদর্শনযোগ্য স্থানগুলির মধ্যে রয়েছে –

  • গর্ভনমেন্ট মিউজিয়াম আ্যন্ড আর্ট গ্যালারী
  • শান্তি কূঞ্জ
  • ফান সিটি
  • গার্ডেন অফ ফ্র্যাগরেন্স
  • ইন্ট্যারন্যাশনাল ডলস্ মিউজিয়াম
  • চোকি ধানি
  • বাটারফ্ল্যাই পার্ক
  • ল্যেইসার ভ্যালি
  • রক্ গার্ডেন
  • সুখনা লেক
  • ওপেন হ্যান্ড মনুমেন্ট
  • ক্যাপিটল কমপ্লেক্স
  • রোজ্ গার্ডেন

* চন্ডীগড়ের পরিভ্রমণমূলক স্থানগুলির বিষয়ে নীচে বিস্তারিত আলোচনা করা রয়েছে –

গর্ভনমেন্ট মিউজিয়াম আ্যন্ড আর্ট গ্যালারী

  • শ্রেণী : ইতিহাস ও সংস্কৃতি
  • শৈল্পিক বস্তু, অঙ্কন, স্থাপত্য ও ভাস্কর্য্যের এক অনন্য সংগ্রহের কারণে এই গর্ভনমেন্ট মিউজিয়াম আ্যন্ড আর্ট গ্যালারী হল ভারতের এক অন্যতম প্রসিদ্ধ মিউজিয়াম (যাদুঘর)। এই অঙ্কনগুলির মধ্যে রয়েছে পাহাড়ি ও রাজস্থানের সূক্ষ্ম অঙ্কন এবং গান্ধার ভাস্কর্যসমূহ। এই যাদুঘরটি ১৯৪৮ সালের ভারত বিভাজনের সময়কালের অধিকাংশ প্রদর্শসমূহের জন্য ঋণী কারণ ঐসময় প্রায় ৪০ শতাংশ বস্তু লাহোর মিউজিয়াম থেকে এখানে আনা হয়েছিল। ১৯৬৮ সালে এই যাদুঘরটির উদ্বোধন করা হয় এবং এটি বিশাল এলাকাসহ চন্ডীগড়ের কেন্দ্রে অবস্থিত। এই যাদুঘরের চারটি প্রধান শাখা রয়েছে; যেমন দ্য আর্ট গ্যালারী, দ্য ন্যাশনাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম, দ্য ন্যাশনাল গ্যালারী অফ পোট্রেটস এবং দ্য চন্ডীগড় আর্কিটেকচ্যার মিউজিয়াম।

    শান্তি কূঞ্জ

  • শ্রেণী : ইতিহাস ও সংস্কৃতি
  • শন্তি কূঞ্জ, তার নাম অনুসারে সার্থক কারণ এটি একটি শান্ত-স্নিগ্ধ বাগান যা সমস্ত কোলাহল ও দূষণ থেকে অব্যাহতি প্রদান করে। এটি রোজ্ গার্ডেন এবং ক্রিকেট স্টেডিয়ামের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত, সুতরাং এটি সহজেই পরিদর্শন করা যায়। এই বাগানে অনেক ধরনের বৈচিত্র্যময় উদ্ভিদ ও গাছ রয়েছে যেগুলি বিভিন্ন প্রকার ফুল বা ওষধি ধরনের হতে পারে। শান্তিকূঞ্জের ঘন সবুজ গাছপালা একটি প্রাকৃতিক প্রবাহ দ্বারা সেচিত করা হয়, যা এই বাগানটিকে বিভিন্ন গাছপালার বৈচিত্র্য সহ পাঁচটি ভাগে ভাগ করেছে। যদি কেউ ধ্যান এবং সুন্দর সুন্দর ফুলের মাঝে শান্তি উপভোগ করতে চায়, তবে এই শান্তি কূঞ্জ একটি আদর্শ স্থান।

    ফান্ সিটি

  • শ্রেণী : বিনোদন
  • ভারতের এক অন্যতম বৃহৎ চিওবিনোদনমূলক উদ্যান হল দ্য ফান্ সিটি আ্যমিউসমেন্ট পার্ক যেখানে সমস্ত বয়সের মানুষের জন্য মজাদার ক্রীড়া অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। এখানে প্রায় ৪৩ একর এলাকা জুড়ে বেশ কিছু সেরা উচ্চ-প্রযুক্তিসম্পন্ন জলবাহী ও জল-ক্রীড়া প্রতিস্থাপিত রয়েছে। এটি চন্ডীগড় থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত তবে সমস্ত রাইডস ও দৃশ্য উপভোগের মাধ্যমে সারাদিন কাটিয়ে দেওয়ার জন্য এটি উপযুক্ত। এই উদ্যানটির এক অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হল ৫-ডি চলচ্চিত্র রঙ্গমঞ্চ বা প্রেক্ষাগৃহ, যা দর্শকদের সম্পূ্র্ণরূপে এক ভিন্ন জগতে নিয়ে যায়। ফান্ সিটিতে ওয়াটার রাইডস্ খুবই জনপ্রিয় এবং সমস্ত ভ্রমণার্থীদের একটি স্নিগ্ধ-শীতল অভিজ্ঞতা প্রদান করে।

    গার্ডেন অফ ফ্র্যাগরেন্স

  • শ্রেণী : বাগান
  • চন্ডীগড়ে এক অন্যতম সেরা দর্শনীয় স্থান হল তার পরিষ্কার ও সুগন্ধ যুক্ত বৈচিত্র্যময় উদ্ভিদ ও গাছ সহ দ্য গার্ডেন অফ ফ্র্যাগরেন্স। এটি চন্ডীগড়ের তিনটি প্রধান বাগানের মধ্যে এক অন্যতম। দ্য গার্ডেন অফ ফ্র্যাগরেন্স, দ্য হিবিসকাশ্ গার্ডেনের দক্ষিণে সেক্টর-৩৬-এ অবস্থিত। দ্য গার্ডেন অফ ফ্র্যাগরেন্স-এ একটি সুবিধা হল এখানে বেশিরভাগ সময় খুব বেশি ভিড় থাকে না এবং স্বাস্থ্য সচেতন যে কেউ এখানকার রাস্তায় পদচারণা করতে পারেন। এটি একটি সু-পরিচিত পিকনিকের স্থান এবং এখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা সকাল ও সন্ধ্যার সময় তাদের পরিবারের সঙ্গে এখানে পিকনিক করতে আসে।

    ইন্ট্যারন্যাশনাল ডলস্ মিউজিয়াম

  • শ্রেণী : বিনোদন
  • ১৯৮৫ সালে এই প্রসিদ্ধ যাদুঘরটি নির্মিত হয়েছিল এবং তার সুন্দর সুন্দর পুতুল যেগুলি প্রায় সমস্ত বিশ্ব থেকে সংগৃীত করা হয়েছিল। এই মিউজিয়ামটি সাধারণত প্রাথমিকভাবে শিশুদের বিনোদন প্রদানের উদ্দেশ্যে চালু করা হয়েছিল কিন্তু ধীরে ধীরে এটির ভালো অগ্রগতি হয়েছে যা বিশ্ব-ব্যাপী স্বীকৃত হয়েছে ও খ্যাতি অর্জন করেছে। এই মিউজিয়ামটিতে বিভিন্ন দেশের থেকে আনা পুতুল ও পুতলি রয়েছে; যেমন – জার্মানী, রাশিয়া, কোরিয়া, স্পেন্, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ড ইত্যাদি। ভারতীয় রাজ্যগুলির বিভিন্ন পোশাকে সু-সজ্জিত, ভারতীয় পুতুলগুলির আকর্ষণীয় প্রদর্শন সমস্ত দর্শকদের সম্মোহিত করে তোলে। পুতুলগুলিকে রূপকথার পরী চরিত্রে প্রতিস্থাপণ করাও একটি চমৎকার বিস্ময়। এখানে শিশুদের সুবিধার জন্য একটি টয় ট্রেনে চড়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে যা শিশুদেরকে অত্যন্তভাবে মাতিয়ে তোলে।

    চোকি ধানি

  • শ্রেণী : ইতিহাস ও সংস্কৃতি
  • এটি এমন একটি স্থান যেখানে রাজস্থানী উপজাতিদের সংস্কৃতি ও অনুশীলন পরিলক্ষিত হয়, যা দর্শকরা তাদের সংস্কৃতির সৃজনশীলতার নির্মাণকে দেখার জন্য উঁকি মারে। এটি সুদূর কোনও এক দূরবর্তী স্থানে অবস্থিত এবং গ্রামের আড়ম্বরতা ও রহস্যময়তার যাদুমন্ত্রে, শিল্প ও সংস্কৃতির পুর্নগঠনকে যে কেউ চরম শান্তিতে উপভোগ করতে পারে। চোকি ধানিতে সমস্ত প্রকারের বিনোদন প্রদানের এবং জাদু (ম্যাজিক) প্রদর্শনের ও উটে চড়ার সু-পরিকল্পিত ব্যবস্থা রয়েছে। এই অনুষ্ঠানের সদগুণ হল তাদের প্রদত্ত খাবার। রাজস্থানি রান্নার উপর ভিত্তি করে থালি উপাদান প্রদান করা হয়।

    সুখনা লেক

  • শ্রেণী : প্রকৃতি
  • সুখনা লেক, শিবালিক পর্বতমলার পাদদেশে অবস্থিত এক অন্যতম সুন্দর হ্রদ। ১৯৫৮ সালে নির্মিত প্রায় ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এটি একটি মনুষ্য দ্বারা নির্মিত হ্রদ। সুখনা চৌ নামে একটি প্রবাহ, জলাধার ছিল এবং সেই থেকেই এটিকে সুখনা লেক নাম দেওয়া হয়েছিল। এটি একটি সুদৃশ্যময় সরোবর সহ শান্তিময় স্থান এবং এর সঙ্গে পাখির সুর এই বাতাবরণে আরোও স্নিগ্ধতা যোগ করেছে। বেশ কিছু সংখ্যক জল-ক্রীড়া (ওয়্যাটার স্পোর্ট); যেমন – বোটিং (নৌকা-বিহার), ওয়্যাটার স্কিয়িং, ইয়্যাচটিং এখানকার মানকে বৃ্দ্ধি করেছে। এখানে সকাল ও সন্ধ্যাবেলায় পিকনিক করা এক সাধারণ ব্যাপার এবং যে সমস্ত ব্যাক্তি দীর্ঘ দিন পর সতেজতা অনুভব করতে চান, সেই সমস্ত স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে এটি বৈঠকখানা হয়ে উঠেছে। বিস্তারিত তথ্য….

    নেক চাঁদ’স রক গার্ডেন

  • শ্রেণী : ইতিহাস ও সংস্কৃতি
  • চন্ডীগড়ের নেক চাঁদ’স রক গার্ডেন হল ভারতের এক সবচেয়ে অন্যতম স্থাপত্যময় প্রশংসিত স্থান। এটি ভাস্কর্য্য, মূর্তি ও অন্যান্য শৈল্পিক বস্তুর সমন্বয়ে নির্মিত যেগুলি গার্হস্থ্য ও শিল্পায়নের বর্জ্য পদার্থকে কাজে লাগিয়ে তৈরী করা হয়েছে। এটি ১৯৫৭ সালে নেক চাঁদ সম্পূর্ণ নিজ হাতে, সুখনা লেকের একেবারে নীচের ঘাটে নির্মাণ করেছিলেন, পরবর্তীকালে এটি সরকার কর্তৃক হস্তান্তর করা হয়েছিল। দ্য রক গার্ডেনটি, অনেক শৈল্পিক বস্তু ও ভাস্কর্য্যের সমন্বয়ে আন্তঃ-সুসংযুক্ত প্রাঙ্গন সহ এক গোলকধাঁধার ন্যায় নির্মাণ করা হয়েছিল। বাগানের অনন্য স্থাপত্যের গঠন দর্শকদের আকৃষ্ট করে এবং এটি একটি ঘটনা দেখিয়ে দেয় যে বর্জ্য পদার্থও এমন এক সুন্দর যোগ্য সম্পদ তৈরী করতে পারে। বিস্তারিত তথ্য….

    চন্ডীগড়ের দ্য রোজ্ গার্ডেন

  • শ্রেণী : ইতিহাস ও সংস্কৃতি
  • চন্ডীগড়ের জাকির হুসেন রোজ গার্ডেন, গোলাপ প্রেমীদের জন্য একটি খুবই সুন্দর স্থান। ১৬০০-রও বেশি বৈচিত্র্যের গোলাপে এই বাগানটি বিভূষিত রয়েছে এবং তার সুবাস ও সৌন্দর্য্যে দর্শকদের হৃদয়কে ইন্দ্রজালে জড়িয়ে ফেলে। সমস্ত দিক দিয়ে প্রায় একর জায়গা জুড়ে প্রসারিত এই বিশাল বাগানটি শুধুমাত্র গোলাপের দ্বারাই সমৃ্দ্ধ নয়, বেশ কিছু ঔষধি গাছ ও কিছু জায়গায় গুল্ম সমন্বিত রয়েছে। বাগানে শরীর-চর্চার জন্য বেঞ্চ ও ট্রায়্যালও রয়েছে। খাবারের দোকান রয়েছে এবং এখানে কোনও প্রবেশ মূল্য নেই, তবে অন্যান্য জায়গার ন্যায় এখানে পিকনিক করার অনুমতি নেই। রোজ গার্ডেনে ফুলের দীপ্তিশীল সজ্জা, নৃত্য, খাবার সহ বার্ষিক একটি অনুষ্ঠান পালিত হয় এবং বিজয়ীদেরকে উপহার দেওয়া হয়। বিস্তারিত তথ্য….

    বাটারফ্ল্যাই পার্ক

  • শ্রেণী : ইতিহাস ও সংস্কৃতি
  • চন্ডীগড়ের সেক্টর ২৬-এ অবস্থিত দ্য বাটারফ্ল্যাই পার্ক, সাত একরের এক সুবিশাল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত প্রজাপতিদের অতি প্রযত্নে নিবেদিত। এখানকার নির্মিত প্রাকৃতিক দৃশ্য চোখকে খুবই আকর্ষণ করে ও আনন্দ দেয় এবং উদ্যানটি বিশাল সংখ্যক উদ্ভিদ ও গাছপালার সমন্বয়ে গঠিত যেখানে দর্শকেরা শিথিলতা অনুভব করে এবং উজ্জ্বল ও সুন্দর সুন্দর প্রজাপতিকে দেখে আনন্দ উপভোগ করে। বিভিন্ন বৈচিত্র্যের উদ্ভিদ এখানে রোপণ করা হয় এবং যেহেতু প্রজাপতিদের জন্য ফুলের প্রয়োজন, তাই এখানে বিভিন্ন প্রকারের ফুলের গাছ যেমন – গাঁদা, স্যালভিয়া, পিটুনিয়া ও ডালিয়া ইত্যাদিও রোপণ করা হয়।

    ল্যেইসার ভ্যালি

  • শ্রেণী : ইতিহাস ও সংস্কৃতি
  • ল্যেইসার ভ্যালি হল চন্ডীগড়ের সবচেয়ে সুস্পষ্টময় দর্শনীয় স্থান এবং সৌন্দর্যবর্ধিত এক গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন আকর্ষণ। এটি সৌন্দর্য্য ও অনন্য বাগানের এক মাল্য বা শৃঙ্খলা, যা দর্শকদের পাঁচটি জ্ঞানেন্দ্রিয়কে চঞ্চল করতে পারে। এটি বাগানের একটি প্রসারণ, যেটি সেক্টর-১ অবস্থিত রাজেন্দ্র পার্ক থেকে শুরু হয়েছে এবং প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে অনেক বাগান ও উদ্যানের সমন্বয়ে প্রসারিত রয়েছে। সেই সমস্ত বাগান ও উদ্যানগুলির মধ্যে রয়েছে – রোজ গার্ডেন্, শান্তি কূঞ্জ, বোগেনভিলিয়া গার্ডেন্, হিবিসকাশ্ গার্ডেন্, গার্ডেন অফ ফ্র্যাগরেন্স ইত্যাদি। এই ল্যেইসার ভ্যালিতে একটি ৩-দিন ব্যাপী কার্নিভ্যাল বা আনন্দমেলা হয় যার মধ্যে সমস্ত বাগানগুলি অন্তর্ভূক্ত থাকে। ফেব্রুয়ারী মাসে নির্ধারিত এই বার্ষিক কার্নিভ্যালটি দেশব্যাপী একটি খ্যাতনামা উৎসব এবং এমনকি এই উৎসবটি অন্যান্য দেশের পর্যটকদেরকেও আকৃষ্ট করে।

    চন্ডীগড়ে কেনাকাটা

    চন্ডীগড়, ভারতের একটি আধুনিক শহর। ভারতের অন্যান্য পর্যটন গন্তব্যস্থলের সদৃশ চন্ডীগড় ইতিহাস ও ঐতিহ্যে পরিপূর্ণ শহর নয়। সুতরাং চন্ডীগড়ে কেনাকাটা করা একটি ভিন্ন অভিজ্ঞতা।
    সুন্দর শপিং মল, সু-সজ্জিত তোরণ-তারণ, সর্বোৎকৃষ্ট ভিড়, মার্জিত ঝর্ণাময় দৃশ্য, স্থাপত্য ও গাছের ঝলমলতা – চন্ডীগড়ে কেনাকাটা এক অন্য জিনিস হয়ে উঠবে কিন্তু তা ভারতীয়তাপূর্ণ। খাবার-দাবারের দোকান, কফি হাউস, বার, পাব – দোকানগুলিকে সুন্দরভাবে দখল করে আছে।
    চন্ডীগড়ে প্রধান কেনাকাটার বাজার সেক্টর – ১৭ অবস্থিত। প্রতিদিন সন্ধ্যার সময়, এই স্থান শহরের সবচেয়ে ঘটনাবহুল স্থান হয়ে ওঠে।
    সমৃদ্ধ ভান্ডারযুক্ত দোকানগুলির ভিতরে আপনি বিভিন্ন ধরনের জিনিস, মূলত সমস্ত কিছুই পেয়ে যাবেন। এই শহরে বেশ কিছু হস্তশিল্পের দোকান রয়েছে, তবে সেখানে কেনাকাটার জন্য ‘চন্ডীগড়ী’ ঐতিহ্যের কোনও দ্রব্য নেই। সেগুলিতে প্রধানত প্রতিবেশী রাজ্যের তাঁতের জিনিস ও হস্তশিল্পের বিভিন্ন রকমারি দ্রব্য রয়েছে।
    তবে এখনো, চন্ডীগড়ে কেনাকাটার সময় প্রসিদ্ধ সৌখিন জুতি, বর্ণময় পাঞ্জাবি ওড়না, স্থানীয় পশমীয় পরিধেয় পোশাক এবং হিমাচল প্রদেশের সু-স্বাদু জ্যাম্ ও জ্যুসের খোঁজ করতে পারেন।

    চন্ডীগড়ে হোটেল

    যেহেতু উত্তর ভারত, ভারতবর্ষের সবচেয়ে ব্যস্ততম পর্যটন গন্তব্যস্থল এবং চন্ডীগড়েও সারাবছর ধরে সেই ভিড় সুস্পষ্ট রূপে লক্ষ্য করা যায়। অধিকাংশ চন্ডীগড়ের হোটল-গুলি বিধিসম্মতভাবেই রাজ্যের পার্শ্ববর্তী গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন স্থলগুলির সান্নিধ্যে অবস্থিত।

    * সর্বশেষ সংযোজন : ২২ - শে মে, ২০১৫