সিকিম পর্যটন

Travel to Sikkim in Bengali

সিকিম পর্যটন
* সিকিম পর্যটন মানচিত্রে, সিকিমের মন্দির, শৈলশহর, প্রধান শহর ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন স্থলগুলি দেখানো হয়েছে।
” ফুটবল সম্মীলন সিকিম “ ” গণেশ – টোক মন্দির “ হিমালয় জুওলোজিক্যাল উদ্যান
” খেচিওপালরি গ্রাম্য – মঠ “ “লাল – বাজার / লাল মার্কেট” ” রূমটেক – মনাস্ট্রি “



সিকিম পর্যটন

মহিমাম্বিত হিমালয়ের পাদদেশে অবস্হিত ঘুমন্ত ছোট রাজ্য সিকিম ছবির ন্যায় নিখুঁত একটি গন্তব্যস্থল। আকর্ষণীয় আলপাইন সৌন্দর্যের জন্য একে প্রায়ই “পূর্বের সুইজারল্যান্ড” হিসেবে অভিহিত করা হয়।

সিকিম ভ্রমনকালে আপনি পৌঁছে যাবেন বরফাবৃত পর্বতের দেশে, পুরু আলপাইন অরন্য সমৃদ্ধ ঘূর্ণায়মান উপত্যকায়। তুষার আবৃত খাড়া উচ্চ এবং নিমজ্জিত উপত্যকাগুলির সমষ্টি হল সিকিম।

সিকিম পর্যটনকালে আপনি নীলাভ আকাশের বুকে মেঘ এবং পর্বত শিখরের লুকোচুরি পরিলক্ষিত করতে পারেন। এখান থেকে আপনি কাঞ্চনজঙ্ঘার উপর সূর্যোদয় এবং আলোকরশ্মির একটি সুবর্ণ রঙের ধারা দেখতে পাবেন। কাঞ্চনজঙ্ঘা বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এবং অভিভাবক দেবতাদের ভূমি হিসাবে পরিচিত।

সুউচ্চ জুনিপার এবং রডোডেনড্রন অরণ্যের অভ্যন্তরে অদ্ভূত সুন্দর গ্রামসমূহ উঁকি মারতে থাকে। সিকিমের উপরের দিকে উঠলে প্রশান্ত হ্রদ এবং রহস্যময় প্রাচীন মঠগুলি পরিলক্ষিত হয়। এখানে আপনি বাতাসের মধ্যে প্রার্থনা পতাকাগুলির ঝাপটানিতে প্রার্থনা ঘন্টাধ্বনির আওয়াজ শুনতে পাবেন। এখানে পৌরাণিক কাহিনী এবং প্রাকৃতিক ঐশ্বর্য একে অপরের সাথে মিশ্রিত হয়ে রয়েছে।

সিকিমের জনপরিসংখ্যান
অবস্থান ভারতের পূর্ব প্রান্তে, উত্তরে তিব্বত, পশ্চিমে নেপাল,
পূর্বে ভুটান এবং দক্ষিণে পশ্চিমবঙ্গ অবস্থিত।
অক্ষাংশ 27 ডিগ্রী 30 মিনিট থেকে 28 ডিগ্রী 30 মিনিট উত্তর
দ্রাঘিমাংশ 80 ডিগ্রী 30 মিনিট থেকে 88 ডিগ্রী 30 মিনিট পূর্ব
আয়তন 7096 বর্গ কিলোমিটার
জলবায়ু গ্রীষ্মকাল – গরম, শীতকাল-ঠান্ডা কখনও কখনও হিমায়িত
সর্বোচ্চ তাপমাত্রা 28 ডিগ্রী সেলসিয়াস
সর্বনিম্ন তাপমাত্রা 0 ডিগ্রী সেলসিয়াস
বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত 325 সেন্টিমিটার
রাজধানী গ্যাংটক
জনসংখ্যা 5,40,493
ভাষা লেপচা, ভুটিয়া, নেপালি, লিম্বু
ধর্ম বৌদ্ধ, হিন্দু, খ্রিস্টান, ইসলাম
পরিদর্শনের সেরা সময় মার্চ থেকে আগস্ট
পরিধান গ্রীষ্মকালে – সূতি, শীতকালে – পশমী

সিকিম ভ্রমনকালে পর্যটকরা তীব্রবেগে সমতলে নেমে আসা তিস্তা এবং রঙ্গিত নদীর সাদা জলের উপর র্যাফটিং করতে পারেন।

সিকিমে পৌঁছানোর উপায়

হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত সিকিমকে “পূর্বের সুইজারল্যান্ড” নামেও অভিহিত করা হয়ে থাকে। সুউচ্চ, কুয়াশা-আবৃত পর্বতমালা সিকিমের দিগন্ত জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে। তিস্তা নদী এই পার্বত্য উপত্যকা অঞ্চলের উত্তেজনাপূর্ণ সৌন্দর্যকে বৃদ্ধি করে থাকে।

বিমান মাধ্যমে

সিকিমের নিজস্ব কোন বিমানবন্দর নেই। নিকটতম বিমানবন্দরটি হল পশ্চিমবঙ্গের বাগডোগরা, (শিলিগুড়ির কাছাকাছি) যা সিকিমের রাজধানী গ্যাংটক থেকে ১২৫ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। বাগডোগরা নিয়মিত উড়ানের মাধ্যমে দিল্লি ও কলকাতার মত শহরের সাথে সংযুক্ত রয়েছে।

সড়ক মাধ্যমে

সিকিম রাজ্যটি হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত হলেও এখানে ভাল সড়ক সংযোগ ব্যাবস্থা পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলের মাধ্যমে সিকিমে প্রবেশ করা যায়। দার্জিলিং, কালিম্পং এবং শিলিগুড়ি সরাসরি গ্যাংটক এবং রাজ্যের অন্যান্য শহরের সাথে সংযুক্ত রয়েছে। তবে বর্ষার সময় কখনও কখনও ভূমিধ্বস্ সড়ক পরিবহন ব্যবস্থায় অস্থায়ী সমস্যার সৃষ্টি করে থাকে।

রেল মাধ্যমে

সিকিমের নিজস্ব সীমানায় কোনো রেল সংযোগ ব্যাবস্থা নেই। সিকিমের কাছাকাছি রেলস্টেশন হল নিউ জলপাইগুড়ি (শিলিগুড়ির কাছাকাছি) যা সড়ক পথে গ্যাংটকের সাথে সংযুক্ত রয়েছে। নিউ জলপাইগুড়ির সাথে ভারতের প্রধান রেলস্টেশন যেমন কলকাতা, দিল্লির একটি বিস্তীর্ণ রেলওয়ে সংযোগ ব্যাবস্থা রয়েছে। এটি সুবিধাজনকভাবে গুয়াহাটির মত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শহরগুলির সাথেও সংযুক্ত রয়েছে।

সিকিমে পরিদর্শমূলক স্থান

কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতের পাদদেশে অবস্থিত সিকিম একটি অনাবিষ্কৃত সৌন্দর্যে পরিপূর্ন স্হান। সিকিমের দিগন্ত জুড়ে বিস্তৃত এখানকার তুষারাবৃত পর্বত শৃঙ্গ, সবুজ পান্না ঢালু উপত্যকা, নদীর গতিময় প্রবাহ, লম্বা রডোডেনড্রন এবং ঝিলিমিলি অর্কিড পর্যটকদের আকর্ষিত করে। পাহাড়ি মঠগুলি প্রস্তরময় ভূখণ্ডের উপর অবস্থিত যেখানে রঙীন প্রার্থনা পতাকাগুলি পার্বত্য হাওয়ায় দুলতে থাকে।

sikkim-tourist-map
সিকিমের বিস্তৃত পর্যটন মানচিত্র দেখতে ক্লিক করুন

সিকিমের দর্শনীয় স্থান

  • গ্যাংটক।
  • ইয়াকসাম।
  • সমগো হ্রদ।
  • নাথুলা পাস।
  • পেলিং।
  • দ্যা রুমটেক মনাস্ট্রি।
  • ডো-ড্রুল-চোর্তেন।
  • জওহারলাল নেহেরু বোটানিকাল গার্ডেন।
  • সিকিম রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ তিব্বতলজী।
  • উদ্ভিদ ও প্রাণী অভয়ারণ্য।
  • তিস্তা নদী।
  • মনাস্ট্রি লুপ।
  • রাবংলা।
  • নামচি।
  • পেমিয়াংসে গুম্ফা।
  • রাব্দেন্তসে।
  • জোরথাং।
  • লাচুং।
  • ইয়াম্থাং ভ্যালি।
  • লাচেন।
  • তেমি।
  • তাশিদিং।
  • জুলুক।

গ্যাংটক


  • বিভাগ : ইতিহাস ও সংস্কৃতি
  • সিকিমের রাজধানী একটি মুগ্ধকারী এবং চিত্রানুগ শহর, এখানে ইতস্তত ছড়ানো আকর্ষনীয় ঘরগুলি পাহাড়ের ঢাল বরাবর নেমে এসেছে। এই শহরটি ঐতিহ্যগত রীতিনীতি এবং আধুনিক জীবনযাত্রার সংমিশ্রণে গঠিত যা এই স্থানটিকে অনন্য করে তুলেছে। সমস্ত আধুনিক সুযোগ সুবিধা এই শহরে উপলব্ধ রয়েছে।

    ইয়াকসাম্


  • বিভাগ : ইতিহাস ও সংস্কৃতি
  • এই শহরটি সিকিমের প্রথম রাজধানী ছিল, ঐতিহাসিক তথ্য থেকে জান যায় যে ১৬৪১ সালে সিকিমের প্রথম শাসক, তিনজন লামা পণ্ডিতদের দ্বারা এই স্থানটির পবিত্রকরন করিয়েছিলেন। এই অনুষ্ঠানের প্রমাণ এখনও নরবুগাং চোর্তেনে রয়েছে। সিকিমের ইতিহাসের শুরু থেকে এই জায়গাটিকে পবিত্র হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। এটি কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বত আরোহনের বেস ক্যাম্প্ হিসাবেও সুপরিচিত।

    সমগো হ্রদ


  • বিভাগ : প্রকৃতি
  • স্থানীয়দের দ্বারা পবিত্র বলে গন্য এই উপবৃত্তাকার হ্রদটি এক কিলোমিটার দীর্ঘ। মে থেকে আগস্ট এর মধ্যে এই হ্রদ এলাকায় বিরল ফুল প্রিমুলা সহ রামধনু এবং নীল ও হলুদ পপি প্রস্ফুটিত হয়, যা সকলকে এখানে আকর্ষিত করে। এই হ্রদের জলে অসংখ্য জলজ এবং বায়বীয় প্রজাতি রয়েছে যা লাল পান্ডাদের জন্য একটি নিখুঁত বাসস্থান হিসাবে পরিচিত। এই হ্রদটি শীতকালে জমে যায়।

    নাথুলা গিরিপথ


  • বিভাগ : প্রকৃতি
  • ইন্দো-চীন সীমান্তে এই পাসটি ১৪২০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এবং এটি তিব্বতের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের মধ্যে দিয়ে সিকিমের সাথে চীনের সংযোগ স্থাপন করেছে। এই পথে যাত্রা একটি উল্লাসজনক অভিজ্ঞতা, কুয়াশাবৃত শৃঙ্গ, আঁকাবাঁকা সড়ক ও গর্জিত জলপ্রপাতের সঙ্গে উত্তরণ আশ্চর্যজনক বলে মনে হয়। এই স্থানে ভ্রমণের জন্য ভ্রমণার্থীদের অনুমতিপত্রের প্রয়োজন হয়।

    পেলিং


  • বিভাগ : প্রকৃতি
  • পেলিং দ্রুত একটি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য হয়ে উঠছে। ৬৮০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত পেলিং, বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ শিখর কাঞ্চনজঙ্ঘার একটি নিকটস্থ দৃশ্য দেখার সবচেয়ে চমৎকার স্থান হিসাবে পরিচিত। পেলিং- এর অন্তর্নিহিত সৌন্দর্য ছাড়াও অন্যান্য আকর্ষণীয় স্থানগুলি হল সাঙ্গা চোইলিং মঠ, পেমিয়াংসে বৌদ্ধ বিহার, ও খেচিপেরি হ্রদ।

    রূমটেক্ মনাস্ট্রি


  • বিভাগ : ধর্মীয়
  • এই মহৎ আশ্রমটি সিকিমের একটি অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটক গন্তব্যস্থল। এটি ষোড়শ গ্যাল্বা কারমাপার বাসস্থান হিসাবে গন্য। এই মঠে অসাধারণ কিছু শিল্প বৈশিষ্ট্য অবস্থিত রয়েছে। একটি সুবর্ণ বৌদ্ধস্তূপ এই আশ্রমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ বলে মনে করা হয়ে থাকে।

    ডো-ড্রুল-চোর্তেন


  • বিভাগ : ইতিহাস ও সংস্কৃতি
  • এটি ১৯৪৫ সালে তিব্বতী বৌদ্ধ ধর্মের প্রধান ন্যিংমার আদেশ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল, ১০৮ টি প্রার্থনা চাকার সহিত এটিকে সিকিমের সবচেয়ে সুন্দর স্তুপ হিসাবে গন্য করা হয়ে থাকে। এখানে বিভিন্ন মন্ডল, ধ্বংসাবশেষ এবং অন্যান্য ধর্মীয় জিনিষ সঞ্চিত রয়েছে। এখানে গুরু মূর্তিও উপস্থিত রয়েছে।

    জওহারলাল নেহেরু বোটানিকাল গার্ডেন


  • বিভাগ : বাগান
  • সিকিম সরকারের বন বিভাগ দ্বারা পরিচালিত জওহারলাল নেহেরু বোটানিকাল গার্ডেনটি রুমটেক মঠ এর কাছাকাছি ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই বাগানটি আকর্ষণীয় ঘন ওক অরণ্য, বিভিন্ন ধরণের গাছপালা এবং অর্কিড দ্বারা সমৃদ্ধ।

    তিব্বতলজি সিকিম গবেষণা ইনস্টিটিউট


  • বিভাগ : ইতিহাস ও সংস্কৃতি
  • এটি তিব্বতি শিক্ষা ও গবেষণার একটি জাতীয় কেন্দ্র হিসাবে সুপরিচিত। বিরল পান্ডুলিপি, বৌদ্ধ পুস্তক এবং মূর্তির বিশাল সংগ্রহের জন্য এই প্রতিষ্ঠানটি সুবিখ্যাত। এই ভবনটি ওক এবং বার্চ গাছের ছোট বন দ্বারা বেষ্টিত তিব্বতি স্থাপত্যের একটি চমৎকার উদাহরণ। এছাড়াও এই প্রতিষ্ঠানে কিছু ধর্মীয় শিল্প কাজ এবং আশ্চর্যজনক রেশম বয়ন চিত্রাংকন পরিলক্ষিত হয়ে থাকে।

    এইসমস্ত জনপ্রিয় জায়গা ছাড়াও সিকিমে আরও অনেক পর্যটন গন্তব্যস্থল রয়েছে। সেইগুলি হল :

    • এনচ্যে মঠ।
    • সা-গর-চটশগ মঠ।
    • তাশিদিং মঠ।
    • ফোদং মঠ।
    • ফেন্সাং মঠ।
    • সারামসা বাগান।
    • তাশি ভিউ পয়েন্ট।
    • রাবদেন্তস ধ্বংসাবশেষ।
    • সোরেং।
    • লাচুং।
    • ইয়ামথাং।
    • গুরু-দোংমার হ্রদ, ইত্যাদি।

    সিকিমের নিকটবর্তী পর্যটন গন্তব্যস্থল

    দার্জিলিং


    সিকিমের কাছাকাছি সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক পর্যটন স্থানের একটি হল দার্জিলিং, এটি তার ট্রয়ট্রেন যাত্রা এবং চা চাষের জন্য বিখ্যাত। এখানে প্রচুর পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে।

    শিলিগুড়ি


    সূক্ষ ভূদৃশ্য, তুষারাবৃত শৃঙ্গ এবং অসংখ্য গাছপালার দূরবর্তী দৃশ্যের সহিত পর্যটকেরা শিলিগুড়িতে প্রকৃতিকে সম্পূর্ণভাবে উপভোগ করতে পারেন।

    কালিম্পং


    সিকিমের কাছাকাছি অবস্থিত কালিম্পং, তার অসাধারণ সৌন্দর্য, অনেক অর্কিড এবং মঠ দ্বারা পরিপূর্ন একটি চিত্তাকর্ষক পর্যটকস্থান। এটি হিমালয়ের চিত্রানুগের পরিপ্রেক্ষিতে ছুটি কাটানোর জন্য এবং দু:সাহসিক অভিযানের জন্য একটি আদর্শ স্থান হিসাবে পরিগণিত হয়ে থাকে।

    মিরিক


    এটি তার বিখ্যাত হ্রদ এবং সুদৃশ্য পারিপার্শ্বিক পরিবেশের জন্য জনপ্রিয়, নব দম্পতিদের রোমান্টিক অবকাশ যাপনের জন্য এটি একটি আদর্শ স্থান।

    সিকিম পরিদর্শনের শ্রেষ্ঠ সময়

    পূর্বে উল্লেক্ষিত আবহাওয়ার কথা মনে রেখে, পার্বত্য এই রাজ্য সফরের শ্রেষ্ঠ সময় হল এপ্রিল এবং মে মাস। বছরের এই সময়ে অর্কিড এবং রডোডেনড্রনের পূর্ণ পুষ্প পরিলক্ষিত হয়ে থাকে।

    সিকিমে কেনাকাটা

    সিকিম একটি আদর্শ কেনাকাটার স্থান না হলেও, এখানে আপনি কি কিনবেন এবং কোথা থেকে কিনবেন যদি সে সম্পর্কে অবহিত থাকেন তাহলে এখানে কেনাকাটা করার আনন্দলাভ করতে পারবেন। সিকিম ঐতিহ্যগত চারু ও কারুশিল্পে ন্যাস্ত রয়েছে, যা সিকিমে কেনাকাটা করতে আপনাকে আনন্দময় করে তুলবে।

    সিকিমে হস্তশিল্প ও বাজার

    বোনা পশমী কার্পেট এবং কম্বলের উপর অনন্য ডিজাইন এবং ঐতিহ্যগত সিকিমের নকশার জন্য সিকিম প্রসিদ্ধ।

    এই সামগ্রীগুলি হল পোক্ত কারিগরী বুনন বস্তু এবং সিকিমীয় উদ্ভিজ্জ রঞ্জকে রঞ্জিত, এগুলি কৃত্রিম রঞ্জকে রঞ্জিত নয়।

    এছাড়াও সুতি বা রেশম পটভূমিতে অঙ্কিত শৈলী যা থাংকাস নামে পরিচিত- শিল্পের জন্যও সিকিম সুপ্রসিদ্ধ। এর সঙ্গে হস্তনির্মিত কাঠের সামগ্রীগুলি সিকিমে কেনাকাটাকে আকর্ষনীয় করে তোলে। এছাড়াও সূক্ষ্ম তিব্বতি শৈলীতে নির্মিত চোকসী টেবিল আগ্রহী ক্রেতাদের কাছে একটি অবশ্যই ক্রয় যোগ্য সামগ্রী হিসাবে বিবেচিত হয়ে থাকে।

    সিকিমে কেনাকাটা করার সময়, সন্ধান করুন :

    সিকিমের রাজধানী গ্যাংটক, এই রাজ্যে কেনাকাটার করার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান হিসাবে গন্য করা হয়ে থাকে। প্রধান বাজার মহাত্মা গান্ধী মার্গ এলাকায় অনেক সরকারী এবং বেসরকারী দোকান অবস্থিত রয়েছে।

    এছাড়াও সিকিমে কেনাকাটার জন্য তিব্বতি হস্তশিল্প কেন্দ্র একটি ভাল জায়গা হিসাবে পরিচিত।

    সিকিমের রন্ধনপ্রণালী

    সিকিম, খাদ্য প্রেমীদের কাছে হিমালয়ের ঐতিহ্যগত রান্নার জন্য বিখ্যাত। সিকিমে রান্নার ভিত্তি হল চাল। এর পাশাপাশি ঠাণ্ডা বিয়ার এবং অন্যান্য পানীয়ের সঙ্গে এখানকার বিখ্যাত রেস্টুরেন্টগুলি এখানে আমিষ ভারতীয়, তিব্বতি, চীনা এবং ইতালিয়ান খাবার তৈরী করে থাকে। সিকিমের রেস্টুরেন্টগুলি মুখে জল আনা পদ যেমন মোমো, পাক্কু (মাটন কারি), থুকপা, ছুরপি (প্রচলিত কুটির পনির) ইত্যাদিও পরিবেশন করে থাকে। নিম্নে কয়েকটি বিখ্যাত রেস্টুরেন্টের নাম রয়েছে :

    • নিউমার্কেটের চায়না প্লেট।
    • এম.জি. মার্গের ড্রাগন’স ডেন্।
    • দেওরালির লিটল ইতালি।
    • নিউমার্কেটের ওবেরয়’স বারবিকিউ।

    নিরামিষাশীরা নিম্নলিখিত রেস্টুরেন্ট পরিদর্শন করতে পারেন :

    • এম জি মার্গের পরিবার রেষ্টুরেন্ট।
    • জাতীয় সড়ক 31A-র উপর মেট্রো’স ফাস্ট ফুড।
    • কৃষ্ণা রেষ্টুরেন্ট।

    সিকিমে হোটেল

    এই রাজ্যে পরিদর্শনকারী পর্যটকদের চাহিদা অনুযায়ী তারকা এবং সাধারন হোটেলসমূহ উপস্থিত রয়েছে। এছাড়াও এখানে রিসর্ট, রেস্তোঁরা এবং ক্যাফে রয়েছে যা পর্যটকদের সমস্ত চাহিদা পূরন করে থাকে। তুষারাবৃত হিমালয় পরিসরের মধ্যে অবস্থিত সিকিম একটি রহস্যময় চিত্রানুগ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের স্থান হিসাবে পরিচিত। এখানকার উচ্চ পর্বত, পুষ্প সম্বলিত তৃণভূমি, বৈচিত্রময় উদ্ভিদ ও প্রাণিকুল তৎসহ স্পন্দনশীল সংস্কৃতি, এই স্থানকে আপনার ছুটির ভ্রমণের এক সেরা গন্তব্যস্থল হিসাবে নিশ্চিত করবে।

    * সর্বশেষ সংযোজন : ২৯ - শে জুলাই, ২০১৫