রাজস্থানের উপর তথ্যাবলী |
|
---|---|
আধিকারিক ওয়েবসাইট | www.rajasthan.gov.in |
স্থাপনের তারিখ | 1 নভেম্বর, 1956 |
আয়তন | 342,239 বর্গ কিলোমিটার |
ঘনত্ব | 201/ বর্গ কিলোমিটার |
জনসংখ্যা(2011) | 68,548,437 |
পুরুষ জনসংখ্যা(2011) | 35,550,997 |
মহিলা জনসংখ্যা(2011) | 32,997,440 |
জেলার সংখ্যা | 33 |
রাজধানী | জয়পুর |
নদীসমূহ | লুনি, বনস, কালি সিন্ধ, চম্বল, জওয়াল ইত্যাদি। |
অরণ্য ও জাতীয় উদ্যান | কেওলাদেও জাতীয় উদ্যান, রণথম্বোর জাতীয় উদ্যান, বাশ্শি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, তাল ছপ্পর বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, ন্যাশন্যাল চম্বল বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ইত্যাদি। |
ভাষা | রাজস্থানি, মারওয়াড়ী, মেওয়ারি, ধূনধারি, মেওয়াটি ও হারৌটি, হিন্দি, পাঞ্জাবি |
প্রতিবেশী রাজ্য | মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লী, পাঞ্জাব |
রাষ্ট্রীয় পশু | উট |
রাষ্ট্রীয় পাখি | গ্রেট ইন্ডিয়ান বাস্টার্ড |
রাষ্ট্রীয় বৃক্ষ | খেজুর |
রাষ্ট্রীয় ফুল | রোহিদা |
রাজ্যের অভ্যন্তরীণ মূল উৎপাদন (2011) | 42434 |
সাক্ষরতার হার (2011) | 80.33% |
প্রতি 1000 জন পুরুষে মহিলার সংখ্যা | 926 |
বিধানসভা নির্বাচনক্ষেত্র | 200 |
সংসদীয় নির্বাচনক্ষেত্র | 25 |
উপমহাদেশের উত্তর-পশ্চিম অংশে অবস্থিত রাজস্থান, পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে পাকিস্তান দ্বারা, উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশ রাজ্য, পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশ রাজ্য এবং দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে গুজরাট রাজ্য দ্বারা সীমান্তবর্তী রয়েছে। কর্কটক্রান্তি রেখা এই রাজ্যের বাঁসওয়ারা জেলার দক্ষিণ প্রান্ত দিয়ে অতিবাহিত হয়েছে। এই রাজ্যের মোট আয়তন হল প্রায় ৩,৪২,২৩৯ বর্গ কিলোমিটার। এর রাজধানী হল জয়পুর।
পশ্চিমী রাজস্থান অপেক্ষাকৃত শুষ্ক ও অনু্র্বর; এই এলাকায় থর মরুভূমির কিছু অংশ অন্তর্ভূক্ত রয়েছে, যা গ্রেট ইন্ডিয়ান ডেজার্ট নামে পরিচিত। রাজ্যের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের জমি আর্দ্র, পার্বত্যময় এবং খুবই উর্বর। সমস্ত রাজস্থান জুড়ে এখানকার জলবায়ু পরিবর্তিত হয়। গড় মাত্রা হিসাবে, শীতকালে এখানে তাপমাত্রার পরিমাণ ৮ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড থেকে ২৮ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড (৪৬ ডিগ্রী থেকে ৮২ ডিগ্রী ফারেনহাইট)-এর মধ্যে থাকে এবং গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রার পরিমাণ থাকে ২৫ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড থেকে ৪৬ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড (৭৭ ডিগ্রী থেকে ১১৫ ডিগ্রী ফারেনহাইট)-এর মধ্যে। গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণও পরিবর্তিত হতে থাকে; পশ্চিমী মরুভূমি এলাকায় বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ হল প্রায় ১০০ মিলিমিটার (প্রায় ৪ইঞ্চি-এর মধ্যে), অন্যদিকে রাজ্যের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশ বার্ষিক ৬৫০ মিলিমিটার (২৬ইঞ্চি-এর মধ্যে) বৃষ্টিপাত পায়, বেশিরভাগ বৃষ্টিপাত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে বর্ষা ঋতুতেই হয়।
প্রত্নতাত্ত্বিক এবং ঐতিহাসিক প্রমাণ থেকে এই এলাকায় ১০০,০০০ বছর আগের ধারাবাহিক জনবসতির পুরনো ইতিহাসের প্রমাণ পাওয়া গেছে। সপ্তম ও একাদশ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যকালে, এখানে অনেক রাজবংশের উদয় হয় এবং ষোড়শ শতাব্দীর শুরুতে রাজপুত শক্তি তাদের উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে যায়। সম্রাট আকবর রাজপুত রাজ্যগুলিকে মোঘল সাম্রাজ্যের অধীনে নিয়ে আসে। ঊনবিংশ শতকের গোড়ার দিকে তারা মারাঠাদের সাথে সন্ধি করে নেন। মোঘল সাম্রাজ্যের পতনের সাথে সাথে, রাজপুতরা ধারাবাহিকভাবে কয়েকটি যুদ্ধে দুর্দান্ত জয়লাভের মাধ্যমে তাদের স্বাধীনতা পুনুরুদ্ধার করে। কিন্তু তারপর ব্রিটিশ রূপী একটি নতুন শক্তি তাদের সম্মুখে আবির্ভূত হয়। অধিকাংশ রাজপুত রাজ্যগুলি ব্রিটিশদের সঙ্গে জোট গঠন করে নেয়, তারা প্রত্যেকটি রাজ্যকে তাদের নিজস্ব মহারাজাদের অধীনে, স্বাধীন রাজ্য হিসাবে রাজত্ব করার অনুমতি দেয়, কিন্তু তাদেরকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ের দিক দিয়ে একটি নির্দিষ্ট গন্ডীর মধ্যে সীমাবদ্ধ করে দেওয়া হয়। তাদের এই জোট-বন্ধন রাজপুত রাজবংশের পতনের অনিবার্যতাকে নিশ্চিত করে দিয়েছিল, এবং তারপর শীঘ্রই রাজপুত শাসকদের অসংযম অপচয় ও বিলাসিতার কারণে রাজপুত রাজত্বের পতন শুরু হয়ে যায়। রাজস্থানের বর্তমান স্বরূপ স্বাধীনতার পরবর্তী কালে এসেছিল।
২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, রাজস্থানের জনসংখ্যা হল প্রায় ৬,৮৫,৪৮,৪৩৭ জন। শেষ দশ বছরে জনসংখ্যার হার ২১.৪৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি ১০০০ জন পুরুষের মধ্যে মহিলার সংখ্যা হল ৯২৬ জন। রাজ্যে সাক্ষরতার হার হল প্রায় ৬৭.০৬ শতাংশ। রাজস্থানের বৃহত্তম শহরগুলি হল জয়পুর, যোধপুর ও কোটা। রাজস্থান ৩৩টি জেলা নিয়ে গঠিত।
রাজস্থানে ২০০টি আসন সহ একটি একক কক্ষবিশিষ্ট বিধানসভা পরিষদ রয়েছে। এই রাজ্য থেকে ৩৫ জন সদস্যকে ভারতীয় সংসদে পাঠানো হয়ঃ ১০ জন সদস্যকে রাজ্যসভায় (উচ্চ কক্ষে) এবং ২৫ জন সদস্যকে লোকসভায় (নিম্ন কক্ষে)। এখানকার স্থানীয় সরকার ৩০টি প্রশাসনিক জেলা নিয়ে গঠিত। রাজনৈতিক দিক দিয়ে, রাজস্থান প্রধানত দুটি প্রধান রাজনৈতিক দল দ্বারা অধীনস্থঃ ভারতীয় জনতা দল (বি.জে.পি) এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (আই.এন.সি)।
রাজস্থানের অর্থনীতি প্রধানত কৃষি ভিত্তিক; এখানে বাজরা, গম, ভুট্টা (ভূট্টা) এবং তুলোর ফলন হয়। রাজ্যের কিছু অংশ যদিও অত্যন্ত শুষ্ক এবং থর মরুভূমি দ্বারা আচ্ছাদিত তবুও রাজ্যের মোট চাষযোগ্য এলাকা হল প্রায় ২৭,৪৬৫ হাজার হেক্টর এবং বপন এলাকা হল প্রায় ২০.১৬৭ হাজার হেক্টর। পর্যটনও এখানকার অর্থনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
প্রাথমিকভাবে এটি কৃষি এবং চারণভূমি সংক্রান্ত অর্থনীতি হলেও, রাজস্থান খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ। সমগ্র ভারতে সবচেয়ে অধিক দস্তার উৎপাদন এই রাজ্যেই হয়, এছাড়াও পান্না এবং গার্নেট, জিপসাম, আকরিক রূপা, অ্যাসবেসটস, ফেলডসপার এবং অভ্রেরও উৎপাদন হয়। এখানকার সম্ভর এবং অন্যত্র খনিজ লবণের সমৃদ্ধ ভান্ডার রয়েছে এবং খেত্রি ও দরিবা-য় তাম্র খনি রয়েছে। যোধপুরের কাছে মারকানায় সাদা মার্বেলের খনন হয়। এখানকার প্রধান শিল্প হল টেক্সটাইল, কম্বল, পশমী পণ্য, উদ্ভিজ্জ তেল এবং রং। ভারী শিল্পগুলির মধ্যে রয়েছে রেল রোলিং স্টক নির্মাণ, তামা এবং দস্তা ধাতুর বিগলন। এখানে রাসায়নিক শিল্পেরও উৎপাদন হয় যেমন ক্ষারীয় সোডা, ক্যালসিয়াম কার্বাইড এবং সালফিউরিক অ্যাসিড, সার, কীটনাশক ও কীটনাশক পদার্থ। এখানে প্রধান শিল্প পরিসরগুলি জয়পুর, কোটা, উদয়পুর ও ভিলওয়ারা-তে অবস্থিত।
প্রচুর অনুর্বর জমি থাকার দরুণ, রাজস্থানে ব্যাপক জলসেচের প্রয়োজন হয়। এখানে পাঞ্জাব নদী থেকে জল উপলব্ধ হয়, এছাড়াও পশ্চিমী যমুনা(হরিয়ানা), আগ্রা খাল(উত্তরপ্রদেশ), দক্ষিণ দিকে সবরমতী ও নর্মদা সাগর প্রকল্প থেকেও জল সরবরাহ করা হয়। এখানে হাজার হাজার জলাধার আছে (গ্রাম্য পুকুর বা হ্রদ) কিন্তু তা সত্ত্বেও রাজ্যটি খরা এবং পলি যুক্ত। রাজস্থান পাঞ্জাবের সঙ্গে ভাকরা নাঙ্গাল প্রকল্প এবং মধ্যপ্রদেশের সঙ্গে চম্বল ভ্যালি প্রকল্প ভাগ করে নিয়েছে; উভয়ই সেচ এবং পানীয় জল সরবরাহের জন্য ব্যবহার করা হয়। স্বর্গীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির স্মৃতির স্মরণে ১৯৮০ সালের মাঝামাঝি সময়ে রাজস্থান ক্যানেলের নাম পরিবর্তন করে ইন্দিরা গান্ধি ক্যানেল রাখা হয়, এই ক্যানেল পাঞ্জাবের বিপাশা ও শতদ্রু নদী থেকে জল বহন করে এনে প্রায় ৪০০ মাইল দূরে উত্তর-পশ্চিমী এবং পশ্চিমী রাজস্থানের মরুভূমি উপত্যকাকে সেচিত করে।
রাজপুতরা যদিও রাজস্থানের জনসংখ্যার এক ছোট অংশ রূপে প্রতিনিধিত্ব করে তবুও তারা রাজ্যের জনসংখ্যার এক গুরুত্বূপূর্ণ অংশ। তারা তাদের সামরিক খ্যাতি এবং বংশবৃতান্তের প্রতি গর্বিত। ব্রাহ্মন বর্গ অনেকগুলি গোত্রে বিভক্ত, অন্যদিকে মহাজনরা (বাণিজ্যক বর্গ)-বিভ্রা্ন্তকর সমষ্টিতে বিভক্ত। এই সমষ্টির কিছু হলেন জৈন, অন্যদিকে বাকি সম্প্রদায় হল হিন্দু। এদের মধ্যে উত্তর ও পশ্চিমে জাট এবং গুজ্জর হল সর্ববৃহৎ কৃষক সম্প্রদায়।
আলওয়ার, জয়পুর, ভরতপুর এবং ধৌলপুর এলাকায় অবস্থিত বিভিন্ন আদিবাসীরা হল মিনা(মেওয়াতি); বানজারা হল সাধারণত ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ী ও কারিগর এবং অন্য আরোও একটি ভ্রাম্যমান উপজাতি হল গড়িয়া লোহার, যারা কৃষিকাজ, ঘর তৈরী ও মেরামতির কাজ করে। ভিলওয়ারা, চিত্তোরগড়, দুঙ্গারপুর, বাঁসওয়ারা, উদয়পুর ও সিরোহি জেলায় অধিষ্ঠিত, ভারতের সবচেয়ে প্রাচীনতম মানুষ ভিল্ যারা তাদের ধর্নুবিদ্যার দক্ষতার জন্য বিখ্যাত। গ্রাসিয়া এবং কাথোড়ি যাযাবরেরা মেওয়ার অঞ্চলে বসবাস করে। শাহারিয়া-দেরকে কোটা জেলায় দেখতে পাওয়া যায় এবং মাড়োয়ার অঞ্চলের রাবারি-রা গবাদি পশুপালন করে।
রাজস্থানের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি উৎসব হল মার্চের শেষ থেকে এপ্রিলের প্রারম্ভে অনুষ্ঠিত বসন্ত উৎসব গঙ্গৌর এবং আগস্টের প্রারম্ভ থেকে শেষের মধ্যে অনুষ্ঠিত তীজ উৎসব। এই তীজ উৎসবটি বর্ষার আগমনকে স্বাগত জানায় এবং এইসময় রাজ্যের প্রচুর জলাধার পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। এখানকার সুপরিচিত কয়েকটি মেলা হল-নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে অনুষ্ঠিত পুষ্করের উট ও গবাদি পশু মেলা, জানুয়ারীর শেষ থেকে ফেব্রুয়ারির প্রারম্ভে অনুষ্ঠিত নাগৌর উৎসব এবং নভেম্বরের মাঝমাঝি থেকে নভেম্বরের শেষে বিকানের-এ অনুষ্ঠিত কুল্যায়ত মেলা। ফেব্রুয়ারির প্রারম্ভ থেকে মাঝামাঝি সময়ে জয়সলমীরে অনুষ্ঠিত মরুভূমি উৎসব হল একটি বিখ্যাত অত্যাধুনিক মেলা।
রাজ্যের প্রধান ভাষা হল রাজস্থানি, কবিরা তাদের প্রভুদের গৌরবান্বিত গান শোনাতে যে ভাষার ব্যবহার করত তা হল ডিঙ্গল যার উৎপত্তি হয়েছিল ইন্দো-আর্য উপভাষার সমষ্টি থেকে। এখানকার প্রধান চারটি উপভাষা হল পশ্চিমী রাজস্থানের মারওয়াড়ী; দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বের জয়পুরী বা ধূনধারি; দক্ষিণ-পূর্বের মালভী বা মাল্যই এবং আলওয়ারের মেওয়াতি যার মধ্যে ভরতপুর জেলার ব্রজভাষার ছায়া রয়েছে। রাজ্যে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রসারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজস্থানি ভাষার ব্যবহার ক্রমশ কমে যাচ্ছে এবং এর জায়গায় হিন্দি রাজস্থানের আধিকারিক ভাষা হিসাবে উন্নীত হচ্ছে।
সাম্প্রতিককালে, রাজস্থান শিক্ষা ক্ষেত্রে এক উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, রাজ্যের সাক্ষরতার হার ৬৭.০৬ শতাংশ। রাজ্যের বিদ্যালয় স্তরের শিক্ষা- রাজস্থান মধ্য শিক্ষা পর্ষদ (বি.এস.ই.আর)দ্বারা বা কেন্দ্রীয় মধ্য শিক্ষা পর্ষদ (সি.বি.এস.ই) দ্বারা অনুমোদিত। ২৫০টি মহাবিদ্যালয় সহ রাজ্যে প্রায় ৯টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এখানে ২৩টি পলিটেকনিক্যাল কলেজ এবং ১৫০-রও বেশি শিল্প প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান(আই.টি.আই) রয়েছে। এখানকার প্রধান তিনটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হল- আই.আই.টি যোধপুর, বিড়লা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলোজি অ্যান্ড সায়েন্স, পিলানি এবং আই.আই.এম উদয়পুর।
রাজস্থানের মোট জনসংখ্যার অধিকাংশই হিন্দু সম্প্রদায়ভুক্ত, তারা সাধারণত ব্রহ্মা, শিব, শক্তি, বিষ্ণু এবং অন্যান্য আরোও দেব-দেবীর পূজার্চনা করে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বল্লভাচার্য্যের ভক্তদের জন্য নাথদ্বার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় কেন্দ্র। এখানে আধুনিক হিন্দুত্বের সংস্কার সম্প্রদায়, আর্য সমাজের পাশাপাশি অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষও রয়েছেন। জৈনরাও এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ; যদিও এটি রাজস্থানের শাসকদের ধর্ম ছিল না তবুও সমাজের কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং বাণিজ্যিক গোষ্ঠী দ্বারা এই ধর্ম মান্য করা হত। প্রধান জৈন তীর্থস্থানগুলি হল মহাবীরজী, রণকপুর, ধূলে এবং কারেরা। অন্য আরেকটি ধর্মীয় সম্প্রদায় ১৬০৩ খ্রীষ্টাব্দে দাদু-র ভক্ত, দাদুপন্থীদের নিয়ে গঠিত যারা সর্ব মানুষ সমান, কঠোর নিরামিষভোজন, উন্মাদক মাদক পদার্থের সম্পূর্ণ ত্যাগ এবং আজীবন ব্রহ্মচর্য্যের প্রচার করত।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ রাজস্থান ভারতের হাজার হাজার পর্যটকদের আকর্ষণ করে। পর্যটন রাজ্যের মোট ঘরোয়া উৎপাদনের প্রায় আট শতাংশের যোগান দেয়। রাজস্থান, সেখানকার দূর্গ, মন্দির ও সুসজ্জিত প্রাসাদের জন্য বিখ্যাত। এখানকার অনেক পুরানো দূ্র্গ এবং প্রাসাদগুলিকে ঐতিহ্যপূর্ণ হোটেল-এ রূপান্তরিত করা হয়েছে। এই কারণেই, এখানে আতিথেয়তার খাতিরে কর্মসংস্থান অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজস্থানে, বিশেষ করে প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় স্থাপত্য বিষয়ক প্রচুর দর্শনীয় পর্যটন স্থল রয়েছে। আকর্ষণীয় পর্যটন স্থলগুলি হল মাউন্ট আবু, আজমের, আলওয়ার (সরিষ্কা ব্যাঘ্র অভয়ারণ্য), ভরতপুর (কেওলাদেও পক্ষী সংরক্ষণ), বিকানের, জয়পুর (গোলাপী শহর), যোধপুর, উদয়পুর, পালি, জয়সলমীর ও চিত্তোরগড়। ১৯৯২ সালে পর্যটনকে শিল্পের মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল।
রাজ্যটিকে অনেক জাতীয় সড়কের মাধ্যমে সংযুক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হল ৮নং জাতীয় সড়ক। রাজস্থানে তিনটি বিমানবন্দর রয়েছে যেগুলি রাজ্যটিকে দেশের অন্যান্য প্রধান শহরগুলির সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। রাজ্যের অধিকাংশ শহরগুলি রেলপথ মাধ্যম দ্বারা সুসংযুক্ত রয়েছে। কোটা শহর হল বিদ্যুতায়িত বিভাগ যা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সমস্ত শহরগুলির মধ্যে তিনটি রাজধানী এক্সপ্রেস এবং অন্যান্য রেলের পরিষেবা প্রদান করে। এখানে একটি আন্তর্জাতিক রেলপথ ব্যবস্থাও রয়েছে, থর এক্সপ্রেস যেটি যোধপুর থেকে করাচি পর্যন্ত যাতায়াত করে। রাজ্যটি, রাজ্য সড়ক ও জাতীয় সড়ক দ্বারা অন্যান্য শহরগুলির সঙ্গে সুসংযুক্ত রয়েছে। রাজস্থান রাজ্য সড়ক পরিবহন নিগম (আর.এস.আর.টি.সি) এবং অনেক বেসরকারি পরিচালকদের দ্বারা রাজ্যের অভ্যন্তরীণ বাস পরিষেবা পরিচালিত হয়।
* সর্বশেষ সংযোজন : ১১- ই মার্চ, ২০১৫
|