নাগাল্যান্ডের উপর তথ্যাবলী |
|
---|---|
আধিকারিক ওয়েবসাইট | www.nagaland.nic.in |
স্থাপনের তারিখ | 30 নভেম্বর, 1963 |
আয়তন | 16,579 বর্গ কিলোমিটার |
ঘনত্ব | 119/ বর্গ কিলোমিটার |
জনসংখ্যা (2011) | 1,978,502 |
পুরুষ জনসংখ্যা (2011) | 1,024,649 |
মহিলা জনসংখ্যা (2011) | 953,853 |
শহুর কেন্দ্রিক জনসংখ্যার অনুপাত (2011) | 28.86% |
জেলার সংখ্যা | 11 |
রাজধানী | কোহিমা |
নদীসমুহ | দোয়াং, দিখু, ধনসিরি, চুবি |
অরণ্য ও জাতীয় উদ্যান | ইন্টাঁকি জাতীয় উদ্যান, রঙ্গাপাহাড় বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, ফকিম বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, পুলিয়েবাডজে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য |
ভাষা | নাগামি, ক্রেওলে, অসমিয়া, ইংরাজী |
প্রতিবেশী রাজ্য | অরুণাচল প্রদেশ, আসাম, মণিপুর |
রাষ্ট্রীয় পশু | মিথুন |
রাষ্ট্রীয় পাখি | ব্লিথ’স ট্রাগোপান |
রাষ্ট্রীয় বৃক্ষ | অল্ডের |
রাষ্ট্রীয় ফুল | কপৌ ফুল |
রাজ্যের অভ্যন্তরীণ মূল উৎপাদন (2011) | 52643 |
সাক্ষরতার হার (2011) | 73.45% |
প্রতি 1000 জন পুরুষে মহিলার সংখ্যা | 931 |
বিধানসভা নির্বাচনক্ষেত্র | 60 |
সংসদীয় নির্বাচনক্ষেত্র | 1 |
নাগাল্যান্ড রাজ্যটি ভারতের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত। রাজ্যটি উত্তর ও পশ্চিমে আসাম, পূর্বদিকে মায়ানমার (পূর্বে বার্মা নামে পরিচিত), উত্তরে অরুণাচল প্রদেশ এবং দক্ষিণে মণিপুর দ্বারা বেষ্টিত।
নাগাল্যান্ড মোট ১৬,৫৭৯ বর্গ কিলোমিটার (৬৪০০ বর্গ মাইল) আয়তন সহ, ভারতের ক্ষুদ্রতম রাজ্য। এই ক্ষুদ্র রাজ্যে নাগা পর্বত অবস্থান করছে যার সবচেয়ে উচ্চতম শৃঙ্গ সারামতীর উচ্চতা হল প্রায় ১২,৬০০ ফুট। নাগাল্যান্ডের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত প্রধান নদীগুলি হল ধনসিরি, দোয়াং, দিখু এবং ঝাঁজি। এর ভূখণ্ড পর্বতময়, ঘন বৃক্ষে আচ্ছাদিত, এবং গভীর নদী উপত্যকা দ্বারা ছেদিত। এখানে উদ্ভিদ ও প্রাণী জগতের বৈচিত্র্য রয়েছে। নাগাল্যান্ডে সাধারণত উচ্চ আর্দ্রতা বিশিষ্ট বর্ষা জলবায়ু থাকে; এখানে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৮০০ থেকে ২৫০০ মিলিমিটার (৭০ থেকে ১০০ ইঞ্চি)।
নাগাল্যান্ডে ৬০-টি আসনের একক-কক্ষ বিশিষ্ট বিধান সভা ক্ষেত্র রয়েছে। রাজ্য থেকে দুইজন সদস্যকে ভারতীয় সংসদে পাঠানো হয়ঃ একজন রাজ্যসভায় (উচ্চ কক্ষে) এবং একজন লোকসভায় (নিম্ন কক্ষে)। এখানে স্থানীয় সরকারের সাতটি প্রশাসনিক জেলা রয়েছে যেমন মোকোকচুং, তুয়েনসাং, মোন, ওখা, জুনহেবোতো, ফেক এবং কোহিমা। নাগাল্যান্ডে বেশ কিছু চিত্তাকর্ষক স্থান রয়েছে যেগুলি বিশ্বের সমস্ত পর্যটকদের আকর্ষিত করে।
রাজ্যটি ৯৩ ডিগ্রী ২০’’ পূর্ব ও ৯৫ ডিগ্রী ১৫’’ পূর্ব অক্ষাংশে এবং ২৫ ডিগ্রী ১৫’’ উত্তর ও ২৭ ডিগ্রী ৪’’ দ্রাঘিমাংশে অবস্থান করছে। রাজ্যের মোট আয়তন হল প্রায় ১৬,৫৭৯ বর্গ কিলোমিটার। ১৯৬৩ সালের ১-লা ডিসেম্বর নাগাল্যান্ড ভারতের ১৬-তম রাজ্য হিসাবে ঘোষিত হয়। নাগাল্যান্ড আগে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ছিল। নাগাল্যান্ড সম্পর্কে আরেকটি আকর্ষণীয় তথ্য হল- এখানে ১৬-টি ভিন্ন জাতিগত সমষ্টি রয়েছে। রীতিনীতি, পোশাক এবং ভাষা সহ তাদের এক নিজস্ব পৃথক সাংস্কৃতিক পরিচয় রয়েছে। নাগাল্যান্ডের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বী। রাজ্যে বেশ কিছু হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষও রয়েছে।
রাজ্যের জলবায়ু সম্পর্কে আলোচনা করলে বলা যেতে পারে যে, রাজ্যে সারাবছর একটি বেশ মনোরম আবহাওয়া অনুভূত হয়। এই মনোরম আবহাওয়া রাজ্যটিকে ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন স্থল হিসাবে গড়ে তুলেছে। রাজ্যের বেশ কিছু আকর্ষক পর্যটন স্থানগুলি হলঃ-
রাজ্যের রাজধানী কোহিমা শহরেও এমন বেশ কিছু স্থান রয়েছে যা এখানকার সমৃদ্ধ ইতিহাস সম্পর্কে জানার জন্য পরিদর্শন যোগ্য। কোহিমায় বেশ কিছু আকর্ষণের মধ্যে রয়েছে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের কবরস্থান, তার আশেপাশের সুন্দর এলাকা, আকর্ষণীয় লাল ছাদ বিশিষ্ট রিকনসিলিয়েশন ক্যাথিড্রাল, বারা বস্তি, নাগাল্যান্ড মিউজিয়াম, নাগাল্যান্ড চিড়িয়াখানা এবং নাগাল্যান্ড উদ্যান ইত্যাদি।
এছাড়াও কোহিমার আশেপাশে খোনোমা আদিবাসী গ্রাম, জলপ্রপাতের জন্য বিখ্যাত জুলেকেঈ, জপফু শৃঙ্গ, জুকৌও উপত্যকা, ডিমাপুর ইত্যাদিও উল্লেখযোগ্য।
বর্তমানে যে অঞ্চল নাগাল্যান্ড রূপে গঠিত হয়েছে, তার প্রারম্ভিক ইতিহাস সম্বন্ধে খুব কম তথ্য জানা গেছে। এমনকি ডিমাপুরে বেশ কিছু বড় ধরনের বেলেপাথরের স্তম্ভ রয়েছে যেগুলির সম্বন্ধেও খুব বেশি তথ্য পাওয়া যায় নি। ১৮৯০ সালেই এই অঞ্চলে ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায় এবং তারপর থেকে ঐতিহ্যগত প্রথায় অনুসৃত হেডহান্টিং (বিজয়নিদর্শন স্বরূপ প্রতিদ্বন্দীর মস্তক ছেদন) প্রক্রিয়াকে বেআইনী বলে ঘোষিত করে দেওয়া হয়। ১৯৪৭ সালে, ভারতের স্বাধীনতার পর এই নাগা অঞ্চল আসাম ও উত্তর-পূর্ব সীমান্ত সংস্থায় বিভক্ত হয়ে যায়। সমস্ত নাগা উপজাতিদের এক রাজনৈতিক সংস্থা তীব্র আন্দোলন দ্বারা একটি খন্ড ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার দাবী করতে থাকে। ১৯৫৭ সালের, কিছু সহিংস ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, ভারত সরকার ভারতীয় শাসনের অধীনে একটি একক নাগা প্রশাসনিক ইউনিটের প্রতিষ্ঠা করেন। নাগা অধিবসীরা তাদের কর দিতে অস্বীকার করে এবং অন্তর্ঘাতের একটি অভিযান চালিয়ে তারা তাদের প্রতিক্রিয়া প্রতিফলিত করে। ১৯৬০ সালে ভারত সরকার, নাগাল্যান্ডকে ভারতের এক স্ব-শাসিত রাজ্য গঠনে সম্মতি দেয়; ১৯৬৩ সালে রাজ্যটি সরকারিভাবে স্বীকৃতি অর্জন করে।
নাগাল্যন্ডের ভৌগোলিক অবস্থান সম্পর্কে চর্চা করলে, ভারতের এই উত্তর-পূর্ব দিকের রাজ্যটির ভূ-সংস্থানগত বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ পাওয়া যাবে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত, নাগাল্যান্ড রাজ্যটি তার আন্তর্জাতিক সীমানা মায়ানমারের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছে। রাজ্যটি ভৌগোলিক স্থানাঙ্কের ২৫ ডিগ্রী ৬’’ ও ২৭ ডিগ্রী ৪’’ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯৩ ডিগ্রী ২০’’ ও ৯৫ ডিগ্রী ১৫’’ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থান করছে। এই রাজ্যে ১৬-টি জাতিগত সমষ্টি রয়েছে যাদের নিজস্ব একটি স্বতন্ত্র রীতিনীতি, পোশাক, ভাষা ও উপভাষা রয়েছে।
নাগাল্যান্ডের অধিবাসী, নাগারা, ইন্দো-মোঙ্গলীয় বংশোদ্ভূত, এটি সেই জাতি যাদের উপস্থিতির উল্লেখ খ্রীষ্ট-পূর্ব দশম শতকের আগে পাওয়া গিয়েছিল। এটি সেই সময় ছিল যখন বেদ-এর সংকলন হয়। নির্দিষ্ট ভৌগোলিক বিতরণের কারণে নাগারা ২০-টিরও বেশি জাতি ও বেশ কিছু উপজাতিতে গঠিত রয়েছে। যদিও এদের মধ্যে অনেক সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে কিন্তু উপজাতিগুলি নিজেদের মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণে বিচ্ছিন্নতা বজায় রেখেছে এবং তাদের নিজেদের মধ্যে সামঞ্জস্যেরও অনেক অভাব রয়েছে। সবচেয়ে বৃহত্তম জাতি হল কোণ্যাক, এর পর রয়েছে এওস, তাংখুল, শেমা এবং অঙ্গামি। অন্যান্য জাতিগুলির মধ্যে রয়েছে লোঠা, শাংতাম, ফোম, চাঙ্গ, খিয়েমনুঙ্গম, ঈমচাঙ্গরে, জেলিয়াং, ছাকেসাং(চোকরি) এবং রেঙ্গমা। এখানকার প্রধান ভাষাগুলি হল অঙ্গামি, আও, চাং, কোণ্যাক, লোঠা, শাংতাম ও সেমা। নাগারা খুবই বন্ধু্ত্বপূ্র্ণ ও সুন্দর প্রকৃতির হয়।
নাগাল্যান্ডের সরকারি বিভাগ, বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজে এবং রাজ্য সরকারের বিভিন্ন বিভাগের পরিচালনার কাজে নিযুক্ত থাকায় রাজ্যটি দক্ষতার সাথে উন্নতি করছে। রাজ্য সরকারের এমন বেশ কিছু বিভাগ রয়েছে যেগুলির প্রধান ব্যাক্তি হিসাবে নাগাল্যান্ডের নির্বাচিত মন্ত্রীরা নিযুক্ত রয়েছেন। এই সরকারি বিভাগগুলি রাজ্য সরকার এবং রাজনীতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। কয়েকটি সরকারি বিভাগগুলি হল নিম্নরূপঃ-
রাজ্যের জনসংখ্যা প্রায় কুড়ি লক্ষ এবং এখানকার জনসংখ্যা ২০০১-২০১১ সালের তুলনায় হ্রাস পেয়েছে। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর থেকে এই প্রথমবার এমন ঘটেছে যে, কোনও রাজ্যের জনসংখ্যা আগের তুলনায় হ্রাস পেয়েছে। রাজ্যের ২০০১-২০১১ সালের দশকীয় বৃদ্ধির হার ছিল -০.৫ শতাংশ।
প্রতি ১০০০ জন পরুষের অনুপাতে এখানে ৯৩১ জন মহিলা বসবাস করে। ১৬,৫৭৯ বর্গ কিলোমিটার মোট আয়তনের হিসাবে, জনসংখ্যার ঘনত্বে এখানে ১১৯ জন মানুষ বাস করে। জনসংখ্যার অধিকাংশই গ্রাম কেন্দ্রিক এবং রাজ্যের স্বাক্ষরতার হার হল প্রায় ৮০.১১ শতাংশ। নাগাল্যান্ডের অধিবাসীরা ‘নাগা’- নামে পরিচিত এবং রাজ্যে প্রায় ১৬-টি উপজাতি রয়েছে।
নাগাল্যান্ডের মতন ভাষার বৈচিত্র্য ভারতের আর অন্য কোনও রাজ্যেই দেখা যায় না। এখানে প্রায় ৩৬-টি ভিন্ন ভাষা ও উপভাষা রয়েছে যেগুলিতে নাগা অধিবাসীরা কথা বলে। নাগামী ছাড়াও রাজ্যে বেশ কিছু অন্যান্য ভাষারও প্রচলন রয়েছে। এই ভাষাগুলি তিব্বতি-বার্মার সমষ্টিগত ভাষার অধীনে পড়ে এবং এগুলি তিনটি ভাগে বিভক্ত রয়েছে- পশ্চিমী, কেন্দ্রীয় এবং পূর্বী নাগা সমষ্টি।
অন্যান্য রাজ্যের মিডিয়ার ন্যায় নাগাল্যান্ডের মিডিয়াও রাজ্যের এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ভারতের এই রাজ্যটি বিচ্ছিন্ন রূপে অবস্থিত হলেও এখানকার মিডিয়া জাতীয় ও আন্তর্জাতীয় সমস্ত সংবাদ নাগাল্যান্ডের বাসিন্দাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যাপারে খুবই তৎপর। রাজ্যের মিডিয়ার মাধ্যম হিসাবে টেলিভিশন, রেডিও ও সংবাদ-পত্র রয়েছে। এই রাজ্যে প্রায় সমস্ত ভারতীয় খবর, বিনোদন ও খেলার চ্যানেলগুলি পৌঁছে গেছে এবং দেশের বাকিদের সাথে রাজ্যটি এইভাবেই যুক্ত রয়েছে। নাগাল্যান্ডের সংবাদপত্র মাধ্যমটি ব্যাপকভাবে বিস্তৃত এবং ভারতের জাতীয় সংবাদ-পত্রগুলি ছাড়াও, রাজ্যের নিজস্ব কিছু সংবাদ-পত্রও এখানে প্রকাশিত হয়।
নাগাল্যান্ডের জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশই কৃষিভিত্তিক। এখানে প্রধান ফসল হল ধান ও ভূট্টা। তবুও, রাজ্যটি খাদ্যের দিক দিয়ে আত্ম-নির্ভর নয়। স্থানান্তর কৃষি (জমি তৈরীর জন্য চারাগাছ কাটা ও জ্বালানোর প্রক্রিয়া) এখানে ব্যাপকভাবে প্রচলিত। বেশ কিছু বছর ধরে বিনা চাষে জমি খালি ফেলে রাখার কারণে মাটির ক্ষয় বৃদ্ধি পেয়েছে ও মাটির উর্বরতা কমে গেছে এবং ফলনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজ্যের প্রায় ১৭ শতাংশ এলাকা জুড়ে আচ্ছাদিত অরণ্যই নাগাল্যান্ডের আয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎস। এখানে বেশ কিছু খনিজ ভান্ডার আছে, যার মধ্যে রয়েছে তৈল ভান্ডার, যদিও কিছু তৈল শোষণ করা হয়ে গেছে। ১৯৭০ সাল থেকে রাজ্যটি শিল্পায়নের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ১৯৭০ সালের প্রারম্ভ পর্যন্ত কেবলমাত্র কুটির শিল্প যেমন বয়ন, কাঠের কাজ, ঝুড়ি ও মৃৎশিল্পের ইত্যাদিরই অস্তিত্ব ছিল। কাঁচামাল, অর্থনৈতিক সম্পদ, বিদ্যুৎ-এর অভাব, খারাপ পরিবহণ ও যোগযোগ ব্যবস্হা-শিল্পায়নের পথে অন্তরায়।
২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, রাজ্যের স্বাক্ষরতার হার হল প্রায় ৮০.১১ শতাংশ। রাজ্য সরকার প্রাথমিক, মৌলিক ও মধ্যশিক্ষার দেখাশোনা করেন এবং ১৪-বছরের কম বয়সের শিশুদের জন্য ‘বিনামূল্যে শিক্ষা’ প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে। এখানকার অধিকাংশ বিদ্যালয়গুলি নাগাল্যান্ড মধ্য শিক্ষা পর্ষদ (এন.বি.এস.ই) এবং কয়েকটি বিদ্যালয় সি.বি.এস.ই পর্ষদ দ্বারা অনুমোদিত। রাজ্যে অনেক মহাবিদ্যালয় রয়েছে যেগুলিতে বিভিন্ন শাখায় যেমন বিজ্ঞান, কলা ও বাণিজ্যিক বিষয়ে শিক্ষা প্রদান করা হয়। এছাড়াও, এখানে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও রয়েছে যেগুলি ইঞ্জিনীয়ারিং, আইন ও ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ প্রদান করে।
ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর-পূর্ব অংশে অবস্থিত নাগাল্যান্ডের রাজধানী হল কোহিমা। ‘কোহিমা’-নামটি পার্বত্য অঞ্চলে উৎপন্ন, ‘কিউ হি’ নামক একটি গাছের নাম অনুসারে রাখা হয়েছিল। কোহিমা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ এক আকর্ষণীয় স্থান। নাগাল্যান্ডের এই রাজধানীতে পরিবহনের যে কোনও মাধ্যমের সাহায্যে সহজেই পৌঁছানো যায়। এখানকার নিকটতম বিমানবন্দরটি ৭৪ কিলোমিটার দূরত্বে, ডিমাপুরে অবস্থিত।
নাগাল্যান্ড রাজ্যটি, ভারতের প্রধান আদিবাসী অঞ্চলগুলির মধ্যে এক অন্যতম। এখানকার আকর্ষণীয় পর্বত, সবুজাবৃত উপত্যকা, নির্ঝর জলপ্রপাত, ঘন বন ও সমৃদ্ধ বন্যপ্রাণী এক সুন্দর পরিবেশের সৃষ্টি করেছে।
ভৌগোলিকগত দিক দিয়ে রাজ্যটি ভারতের উওর-পূর্ব দিকে, ২৫.৬৭ ডিগ্রী উত্তর এবং ৯৪.১২ ডিগ্রী পূর্বে অবস্থান করছে।
সড়ক, রেল ও বিমান মাধ্যম দ্বারা নাগাল্যান্ড রাজ্যটি ভারতের অন্যান্য অংশের সাথে সু-সংযুক্ত রয়েছে। যদিও রেলপথ সংযোগ খুবই কম। এটি বিভিন্ন রাজ্যসড়ক ও জাতীয় সড়কের নিকটবর্তী হওয়ার দরুণ, সড়ক মাধ্যম দ্বারা সহজেই এখানে পৌঁছানো যায়। নাগাল্যান্ড রাজ্য পরিবহন পরিষেবা, রাজ্যের প্রধান প্রধান গ্রাম ও নগরগুলিতে পরিবহন পরিষেবা প্রদান করে, এমনকি ডিমাপুর শহর থেকে মোকোকচুং, গুয়াহাটি এবং শিলং পর্যন্ত রাত্রিকালীন আরামপ্রদ বাস পরিষেবাও চালু আছে। এছাড়াও রাজ্যের আশেপাশে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরার জন্য যে কেউ হলুদ ট্যাক্সিগুলিকেও সম্পূর্ণ বা আংশিক ভাড়া হিসাবে নিতে পারেন। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের অন্তর্গত ডিমাপুর রেল স্টেশন হল রাজ্যের সবচেয়ে প্রধান রেলওয়ে স্টেশন যা গুয়াহাটির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে, এই রেলওয়ে স্টেশন থেকে ভারতের প্রধান কিছু শহরগুলির সরাসরি রেল উপলব্ধ হয়। ডিমাপুর বিমানবন্দর হল রাজ্যের একমাত্র বিমানবন্দর। এখান থেকে গুয়াহাটি ও কলকাতা যাতায়াতের সরাসরি বিমান উপলব্ধ হয়।
এই আদিবাসীদের ভূমি, তার নিজস্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, দূষণ মুক্ত পরিবেশ, সুদৃশ্য দৃশ্যপট এবং অতুলনীয় সংস্কৃতিক ঐতিহ্যের দ্বারা পর্যটকদের প্রলোভিত করে। নিম্নলিখিত তালিকায় নাগাল্যান্ডের স্থানভিত্তিক কয়েকটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ আকর্ষণীয় গন্তব্যস্থলের নাম দেওয়া হলঃ-
অবস্থান | পর্যটন স্থল |
---|---|
ডিমাপুর | দিয়েজেফে ক্রাফ্ট ভিলেজ |
রঙ্গাপাহাড় সংরক্ষিত অরণ্য | |
মধ্যযুগীয় কাছারি রাজত্বের ধ্বংসাবশেষ | |
কিফিরে | ফাকিম বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য |
সালোমি ও মিমির যমজ প্রস্তর এবং উষ্ণপ্রসবণ | |
মিহকী – (লবণামৃত নদী) | |
শিপহি স্টোন মনোলিথ | |
সুখয়্যাপ খাঁড়া বাঁধ | |
ওয়াওয়াদে জলপ্রপাত | |
ঈম্পফি গ্রাম | |
ভিলেজ কেভস | |
কোহিমা | ক্যাথোলিক ক্যাথিড্রাল |
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কবরস্থান | |
জুকৌ উপত্যকা – (ক্যাম্পিং ও ট্রেকিং-এর জন্য প্রসিদ্ধ) | |
খোনোমা হেরিটেজ মিউজিয়াম এবং ক্রাফট সেন্টার | |
স্টেট মিউজিয়াম | |
জুলজিক্যাল পার্ক | |
মোককচুং | এ.কে.এম মিনার |
চুচুইয়ামলাং গ্রাম | |
লাংপাংলং গ্রাম | |
লোঙ্গখুম গ্রাম | |
লঙ্গঋৎজু লেন্ডেন উপত্যকা | |
মোলাং ভিলেজ | মোংজু কি এবং ফুসেন কেই গুহা |
মোপোংচুকেৎ গ্রাম | |
তাংকাম মারোক স্প্রিং | |
মোন | চুই গ্রাম |
লাংমেই গ্রাম | |
লোঙ্গওয়া গ্রাম | |
নাগানিমোরা গ্রাম | |
শাঙ্গনিউ স্হানীয় গ্রামীণ যাদুঘর এবং প্রস্তর মোনোলিথস | |
বেদা জলপ্রপাত ও শৃঙ্গ | |
পেরেন | |
বেনরেউ গ্রাম | |
মাউন্ট পৌণা (পাথর খোদাই ও পর্যটন গ্রাম) | |
ফেক | চিজামি গ্রাম |
খেজাকেনোমা গ্রাম | |
ফুতশেরো গ্রাম | |
পোরুবা গ্রাম | |
রূঝাঝো গ্রাম | |
সূথাজু গ্রাম | |
থেৎসুমি গ্রাম | |
উইজিহো গ্রাম | |
যুর্বা গ্রাম | |
ঝাবামে গ্রাম | |
জুদু হ্রদ | |
গ্লোরি শৃঙ্গ | |
শিলোই হ্রদ | |
জানিবু শৃঙ্গ | |
তুয়েনসাং | চাংশাংমোঙ্কো গ্রাম |
চিলিসে গ্রাম | |
চুংলিয়াংতি প্রস্তর, সাদাং ও শোঙ্গলিয়াংতি | |
ওখা | দোয়াং নদী |
মাউন্ট তিউই | |
তোতসু ক্লিফ | |
উপত্যকা ও লেগুন | |
জুনহেবোতো | আইজুতো – (অরণ্য, হ্রদ এবং গ্রাম) |
ঘোসু পক্ষী সংগ্রহালয় | |
সাতোই পরিসর | |
সুমি নাগা গ্রামসমূহ |
|