![]() |
গোয়া পর্যটন
গোয়া ভ্রমণ ভারতীয় পর্যটন সীমার একটি উচ্চ বিন্দু। চমৎকার প্রাকৃতিক দৃশ্য, রূপালি সুবর্ণ সৈকত, সবুজ পাহাড়, মুখে জল আনা সুস্বাদু সামুদ্রিক খাদ্য এবং অন্যান্য দৃশ্যমান এবং অলীক সৌন্দর্যের আশীর্বাদপ্রাপ্ত একটি আকর্ষণীয় স্হান হল গোয়া। গোয়ার একটি ভ্রমণ শরীর তথা আত্মাকে সতেজ করে তোলে।
ভারতের পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত, এই ক্ষুদ্র পান্নার দেশ গোয়া পশ্চিমঘাট পর্বতমালার পার্বত্য পরিসীমার ঢালে অবস্থিত। এই ছোট নবীন রাজ্য বিশ্বের একটা বিশিষ্ট সৈকত গন্তব্য। শত শত এবং হাজার হাজার মানুষ গোয়া ভ্রমণ করে।
১৯৬১ সালের আগে পর্যন্ত এটা পর্তুগিজদের শাসনাধীন ছিল এবং ১৯৮৭ সালে এই রাজ্য গোয়া নামে ভূষিত হয়। গোয়া ভ্রমণের আগে, আপনি ম্যাপস্ অফ ইন্ডিয়া দেখে নিতে পারেন, যেখানে আপনার সুবিধার্থে কিছু তথ্য দেওয়া হয়েছে –
সাগর, বালি, সূর্য ও সমুদ্র তরঙ্গে আছড়ে পড়া জলোচ্ছাস সহৃদয় ভাবনাহীন মানুষের দ্বারা পরিপ্লুত গোয়া একটি আদর্শ সৈকত গন্তব্য। নারকেল গাছের সারিযুক্ত সমুদ্র সৈকত, সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং অক্লান্ত উৎসবের মেজাজ সহ গোয়া ভ্রমণ সারা বিশ্ব জুড়ে পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
গোয়ার একটা সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে। গোয়ার গীর্জা এবং চ্যাপেল, সূর্য- ধৌত সৈকত বা রঙিন বাজার, যেখানেই আপনি যাবেন পর্তুগিজদের প্রভাব অনুভব করবেন। প্রকৃতপক্ষে, গোয়া পূর্ব ও পশ্চিমের একটি চমৎকার সংমিশ্রণকে প্রদর্শন করে।
গোয়া পৌঁছানোর উপায়
গোয়া ভারতের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্যস্থল। এটি এলাকার ভিত্তিতে ভারতের সবচেয়ে ছোট রাজ্য কিন্তু তার সমুদ্র সৈকত, গীর্জা এবং স্থাপত্যের জন্য বিখ্যাত। গোয়া প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক আন্তর্জাতিক ও সেই সাথে অন্তর্দেশীয় পর্যটকদের দ্বারা পরিদর্শিত হয়। গোয়া দেশের যে কোনো অংশ থেকে সহজে প্রবেশযোগ্য এবং বিমান, রেল এবং সড়কপথ যোগাযোগ দ্বারা সুসংযুক্ত।
বিমান মাধ্যমে
গোয়ার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ডাবোলিম বিমানবন্দর হিসাবে পরিচিত যা সমগ্র গোয়া রাজ্যকে পরিষেবা প্রদান করে। এই বিমানবন্দরটি ডাবোলিমে অবস্থিত এবং রাজধানী শহর পাঞ্জিম থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই বিমানবন্দর ভারতের প্রধান শহর থেকে অন্তর্দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বিমান সরবরাহ করে। অগ্রিম ভাড়া করা ট্যাক্সি এবং বাস এই বিমান বন্দর থেকে সহজেই উপলব্ধ।
রেলপথ মাধ্যমে
গোয়া রাজ্যের দুটি রেল লাইন আছে, একটি দক্ষিণ পশ্চিম রেলপথ দ্বারা পরিচালিত এবং অন্যটি কোঙ্কন রেলপথ দ্বারা পরিচালিত। প্রধান রেল স্টেশনটি হল মারগাঁও রেলস্টেশন যা মারগাঁওয়ে অবস্থিত। এই রাজ্যের আরও অন্যান্য রেল স্টেশন আছে, যেমন পেরনেম, থিভিম, কারমালি এবং কাণকোণ যা বহু ট্রেন দ্বারা সুসংযুক্ত।
সড়ক মাধ্যমে
গোয়া ৬৬, ৪-এ, ৩৬৬, ৫৬৬ এবং ৭৬৮-নং জাতীয় সড়ক দ্বারা সুসংযুক্ত। গোয়ায় মোট ২২৪ কিমি জাতীয় মহাসড়ক, ২৩২ কিলোমিটার রাষ্ট্রীয় মহাসড়ক এবং ৮১৫ কিলোমিটার জেলা মহাসড়ক রয়েছে।
স্থানীয় পরিবহন
বাস
বাস গোয়ার স্থানীয় পরিবহনের মধ্যে একটি দক্ষ যানবাহন বলে প্রমানিত। কাদাম্বা বাস পরিবহন সংস্থা এবং ব্যক্তিগত সংস্থা দ্বারা নিয়মিত ভাবে গোয়ায় বাস চলাচল হয় যা গোয়াকে অন্যান্য স্থানের সাথে সংযুক্ত করে। গোয়া শহরের বাসগুলি পানাজি এবং তার সন্নিহিত এলাকাগুলিতে চলাচল করে এবং পর্যটক ও স্থানীয় মানুষদের একটি সস্তা ও দ্রুত পরিবহণ অভিজ্ঞতা প্রদান করে।
মোটরসাইকেল এবং মোটরসাইকেল ট্যাক্সি
এখানকার একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হল মোটরসাইকেল ট্যাক্সি। এগুকি খুবই সুবিধাজনক কারণ যেই রাস্তাগুলিতে বড় যানবাহনগুলি চলাচল করতে পারেনা এই মোটরসাইকেল ট্যাক্সিগুলি সেই জায়গা দিয়ে খুব সহজেই চলাচল করতে পারে। এই মোটরসাইকেল ট্যাক্সিগুলি তাদের হলুদ মাডগার্ড এবং সাদা নম্বর প্লেটের দ্বারা খুব সহজেই চিহ্নিত। আপনি এখানে দুই-চাকা মোটরসাইকেল ভাড়া করতে পারেন এবং নিজে চালিয়ে ঘুরতে পারেন অথবা আপনি যদি আরামদায়ক ভ্রমণ করতে চান তাহলে মোটর সাইকেল ট্যাক্সির পিছনে বসে আপনার ভ্রমণটিকে উপভোগ করতে পারেন। ভাড়া তদনুসারে পরিবর্তনশীল।
কার (চার-চাকা)
গোয়ায় বিভিন্ন বাজেট ও বিভিন্ন ধরনের চারচাকা উপলব্ধ। এখানে ট্যাক্সি ও কোচ খুব সহজেই উপলব্ধ। পর্যটকরা এখানে লাক্সারি ও সেমি-লাক্সারি ট্যাক্সি এবং কোচ ভাড়া করতে পারেন। তাছাড়াও, আপনি এখানে দুটি বৈচিত্র্যের ভাড়ার কারের সুবিধা পেতে পারেন, যা হল – মোটর চালক সহ এবং মোটর চালক বিহীন।
অটো
অটোরিকশা এখানকার সকল প্রধান স্থানে ব্যাপকভাবে উপলব্ধ। এটা খুবই স্বল্প দূরত্বের বিভিন্ন শহরগুলির মধ্যে যাতায়াত এবং ভ্রমণের জন্য খুবই সুবিধাজনক।
ট্যারিফ বিধি
- নূন্যতম ভাড়া প্রতিদিন ১০০ কিলোমিটার-এর জন্য।
- অন্যান্য রাজ্যের থেকে আসার ট্যাক্স, টোল ট্যাক্স, পার্কিং ফি, ফেরি চার্জ, ইত্যাদি। জি.টি.ডি.সি. কর্তৃক প্রদেয় হলে অতিরিক্ত চার্জ করা হবে।
- রাত্রে থাকা – রাত ৮-টা থেকে সকাল ৮টা।
- যদি গাড়ি ভাড়া করা হয় এবং ৮-টার আগে থেকে রাত ৮-টার পর রাখা হয় তাহলে রাত্রি স্থগিত চার্জ প্রযোজ্য হবে।।
- চার্জ গ্যারেজ থেকে গ্যারেজ করা হয়।
- ৮ ঘণ্টার পেরিয়ে গেলে ডিটেনশন( আটকে রাখার) চার্জ প্রযোজ্য হয়।
এছাড়াও পর্যটন ট্যাক্সি বা হলুদ মাথার ট্যাক্সি সারা গোয়া জুড়ে ব্যক্তিগত অপারেটরদের দ্বারা পরিচালিত হয় এবং কিলোমিটারের ভিত্তিতে চার্জ করা হয় অথবা পরিবহন অধিদপ্তর দ্বারা নির্দেশিত পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভাড়া নেওয়া হয়। ভাড়ার তালিকাটি চালকদের কাছে সর্বত্র উপলব্ধ থাকে।
লঞ্চ এবং ফ্ল্যাট-বটম ফেরি : গোয়া ভ্রমণের জন্য জলপথ একটি অনন্য উপায়। গোয়ায় নৌকা এবং ফেরির বিভিন্ন পরিষেবা রয়েছে। গোয়ায় অনেক খাঁড়ি এবং নদী থাকায় নৌপরিবহন এখানে খুব সস্তা এবং সহজলভ্য পরিবহন মাধ্যম। কিছু জায়গায় জল পরিবহন গ্রহণ করা অপরিহার্য এবং সেই সময় পর্যটকদের নৌকা বা ফেরি ভাড়া করা ছাড়া আর অন্য কোন উপায় নেই।
লঞ্চ পরিসেবা শুধুমাত্র যাত্রীদের জন্য উপলব্ধ এবং পরিষ্কার আবহাওয়ার সময় (সেপ্টেম্বর থেকে মে) নিয়মিত সময় অন্তর ডোনা পাউলা এবং মরমুগাঁও হারবারের মধ্যে পরিচালিত হয়। অন্যদিকে নদীপথের মাধ্যমে যাত্রী ও যানবাহন উভয় পারাপারকারী ফ্ল্যাট-বটম ফেরিগুলি নিম্নলিখিত স্থানগুলির মধ্যে দিয়ে পরিচালিত হয় –
- আলদোনা – করজুয়েম।
- আমোনা – খান্দোলা।
- আরোন্ডা – কিরনপানি।
- আসোলনা – ক্যাভেলোসিম।
- কারোনা – কাল্ভিম।
- কোর্তালিম – মারকেম।
- কোর্তালিম- আগাসাইম।
- দূরভাত – রাসোই।
- কেরি – তিরাকোল।
- নারভা – দিভর।
- ওল্ড গোয়া – দিবার / পাইদাদে।
- রাইবন্দর – দিবার।
- পানাজি – বেতিম।
- পোমবুরপা – চোরাও।
- রাইয়া – শিরোদা।
- রাইবন্দর – চোরাও।
গোয়ার পরিদর্শনযোগ্য স্থান
সাহ্যাদ্রি পর্বতমালার পাদদেশে অবস্থিত এবং আরব সাগর দ্বারা বেষ্টিত গোয়া একটি সবুজ প্রাকৃতিক স্বর্গোদ্যান।
ভারতের পশ্চিম উপকূলের আকাশী নীল জল দ্বারা বেষ্টিত একটি ক্ষুদ্র সবুজ দেশ, গোয়া তার প্রাকৃতিক চিত্রানুগ সৌন্দর্য, আকর্ষণীয় সৈকত এবং বিখ্যাত স্থাপত্য মন্দির, গ্র্যান্ড পার্টি ও উৎসব এবং তার সমৃদ্ধ ইঙ্গ-ভারতীয় ঐতিহ্যের জন্য পর্যটকদের কাছে একটি বিরাট আকর্ষণ। এখানকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান হল গোয়ার সৈকতগুলি, যেগুলির প্রতি বছর সারা বিশ্ব জুড়ে লক্ষ লক্ষ পর্যটকদের আকর্ষণ করে যারা এই প্রাকৃতিক স্বর্গোদ্যান এবং সুস্পষ্ট নভোনীল-সবুজ জলে রৌদ্র-স্নান উপভোগ করে।
মুখে জল আনা সুস্বাদু কোঙ্কন ও গোয়ানিস খাদ্য যেমন চিকেন রেকাডো, জাকুটি এবং অগ্নি-প্রজ্জ্বলিত গোয়ার সৈকতে আয়োজিত রাতের মাতাল করা অনুষ্ঠান অত্যন্ত জনপ্রিয়। বহু সুবিশাল পাহাড় এবং বালির সংগ্রহ, সুবর্ণ বা রূপালী সমুদ্রসৈকতের অসাধারণ সৌন্দর্য পর্যটকদের মুগ্ধ করে।
গোয়ার দর্শনীয় স্থান
![]() |
![]() |
![]() |
![]() |
![]() |
![]() |
![]() |
![]() |
![]() |
![]() |
![]() |
![]() |
![]() |
![]() |
![]() |
![]() |
কান্দোলিম সৈকত
মিরামার সৈকত
মাজোরদা সৈকত
মোবর সৈকত
কোলভা সৈকত
অঞ্জুনা সৈকত
ভারকা সৈকত
সিঙ্কেরিম সৈকত
ভাগাতোর সৈকত
ইমাকুলেট কনসেপশন গির্জা ও রেইস মাগোস দুর্গ
মরজিম সৈকত
বেতালবাতিম সৈকত
বোন্ডলা অভয়ারণ্য
বাগা সৈকত
আরভালেম গুহা
আরভালেম জলপ্রপাত
পালোলেম সৈকত
পালোলেম সৈকত, দক্ষিণ গোয়ার কাণকোণ জেলার চৌদি থেকে ২ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত এবং যা এছাড়াও ‘প্যারাডাইস বিচ’ নামে সুপরিচিত। এটি গোয়ার এক অন্যতম কুমারী সৈকত যা, কয়েক বছর ধরে পর্যটকদের চোখের নিভৃতে ছিল কিন্তু পর্যটকদের পদার্পণের পর থেকে এখন এটি ক্রমান্বয়ে বানিজ্যিক এবং উন্নত হয়ে উঠছে। কাণকোণের দক্ষিণ তালুকায় অবস্থিত পশ্চিমঘাট পর্বতমালার পশ্চাৎপটে এটি একটি উজ্জ্বল সূর্যাস্ত এবং চমৎকার সূর্যোদয়ের স্থান।আকর্ষণীয় পালোলেম সৈকত আমাদের মধ্যে একটিশান্তির অনুভূতি প্রদান করে যা গোয়ার এই নির্মল সমুদ্র সৈকতের এক অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য।
গোয়ার গির্জা
গোয়ার গির্জা গুলি অত্যন্ত জনপ্রিয়। এই রাজ্যে বেশ কিছু গির্জা আছে যা গোয়ার পর্তুগিজ শাসনের দীর্ঘ ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করছে। ধর্মাচরণের একটি স্থান ছাড়াও এই গির্জা পুরাতন দিনের স্থাপত্যের এক সুন্দর নিদর্শন। গোয়ার কিছু জনপ্রিয় গির্জা হল – সেন্ট ক্যাথিড্রাল চার্চ, সেন্ট ফ্রান্সিস অফ আসিসি, বাসিলিকা অফ বম জিসাস, সেন্ট অগাস্টাইন চার্চ এবং অন্যান্য। প্রতিবছর এই গির্জা বহু পর্যটক দ্বারা পরিদর্শিত হয়।
আগুয়াদা দুর্গ
আগুয়াদা দুর্গ গোয়ার ইতিহাসের সবচেয়ে সুপরিচিত টুকরো। এই দুর্গ পর্তুগিজদের দ্বারা ১৬১২ সালে নির্মিত হয়েছিল মারাঠা এবং ওলন্দাজদের আক্রমন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। এই দুর্গে একটি বিশুদ্ধ জলের ঝরনা আছে যা সেই সময়ে এখানকার মানুষদের প্রয়োজনে ব্যবহৃত হত। পর্তুগিজদের গুরুত্বপূর্ণ ক্রিয়াকলাপের জন্য এই বিশাল দুর্গ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করত।
চাপোলি বাঁধ
মারগাঁও থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত চাপোলি বাঁধ পাহাড় দ্বারা বেষ্টিত একটি উপত্যকায় অবস্থিত হওয়ার কারনে এটি একটি চমৎকার নাটুকে সৌন্দর্যের আশীর্বাদপ্রাপ্ত। আপনি যদি মাছ ধরতে অনুরাগী হন, তাহলে, গোয়ার এই পরিবেশ বান্ধব-পর্যটন গন্তব্যটি আপনাদের জন্য এক আদর্শ স্থান।
মহালক্ষ্মী মন্দির
গোয়ার বান্দোরা গ্রামে অবস্থিত মহা লক্ষ্মী মন্দির, দেবী মহালক্ষ্মীকে (ক্ষমতা ও শক্তির দেবী) নিবেদিত। মন্দিরে একটি সুন্দর চক নির্মিত আছে যা এখানকার প্রধান আকর্ষণ। ১৪১৩ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম দিকে নির্মিত এই মন্দির সমস্ত দেশ জুড়ে পর্যটকদের দ্বারা পরিদর্শিত হয়,বিশেষ করে নবরাত্রির সময়, যা এখানে মহান জাঁকজমক এবং আনন্দের সাথে পালিত হয়।
মঙ্গেশি মন্দির
গোয়ার মঙ্গেশি মন্দির আধুনিক এবং ঐতিহ্যবাহী হিন্দু স্থাপত্যের একটি সংমিশ্রণ। এই মন্দিরটি শিবের অবতার, প্রভু মঙ্গুয়েশিকে উৎসর্গীকৃত। কিংবদন্তীরা বলেছেন যে প্রভু ব্রহ্মা নিজে এই শিব লিঙ্গটি পবিত্রীকৃত করেন, যা এখানে পূজিত হয়। এই অধিষ্ঠাত্রী দেবতার মূর্তিটি প্রতি সপ্তাহের সোমবার একটি শোভাযাত্রার দ্বারা বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়।
গোয়ার নিকটবর্তী পর্যটন গন্তব্যস্থল
গোয়ার রাজ্য থেকে মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকের একটি ভ্রমণ পরিকল্পনা করা যেতে পারে। উভয় রাজ্যেই বহু পর্যটন গন্তব্য আছে। মুম্বাই ও পুনে শহর দেশ জুড়ে বহু মানুষ দ্বারা পরিদর্শীত হয়। মুম্বাই বলিউডের (ভারতের বৃহত্তম চলচ্চিত্র শিল্প) গৃহ। এখানে আপনি পরিদর্শন করতে পারেন ভারতের প্রবেশদ্বার (গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া), এসেল ওয়ার্ল্ড এবং মুম্বাইয়ে থাকাকালীন গোয়ার জনপ্রিয় সমুদ্র সৈকত। পুনেতে দর্শকদের আকৃষ্ট করার মত বহু উদ্যান, মিউজিয়াম এবং চিড়িয়াখানা আছে। কর্ণাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরু, ভারতের দ্রুততম ক্রমবর্ধমান শহরগুলোর মধ্যে এক অন্যতম। মহীশূর তার চামুণ্ডেশ্বরী মন্দির সহ অসংখ্য মন্দিরের জন্য সুপরিচিত।
গোয়ায় কেনাকাটা
গোয়ায় কেনাকাটা একটি চমৎকার অভিজ্ঞতা। গোয়ার আদর্শ সৈকত গন্তব্যগুলিতে প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী চমৎকার হস্তশিল্প উপলব্ধ। গোয়ার হস্তশিল্প সত্যিই এখানকার মানুষদের কারিগরি দক্ষতা ও সৌন্দর্যবোধকে প্রতিফলিত করে। এখানে আপনি পেতে পারেন –
- ঝিনুকের খোলস দ্বারা তৈরি পণ্য।
- বাঁশের কাজ।
- পিতলের পণ্যদ্রব্য।
- দুর্লভ এবং পুরাতন মুদ্রা।
- পাথর ও প্রবালের তৈরি উপহার সামগ্রী।
- পোড়ামাটি।
- কাগজ দ্বারা তৈরি হস্তনির্মিত জিনিস।
- খোদাইকৃত আসবাবপত্র।
- সামুদ্রিক পরিধান এবং হ্যামোক( বিছানার সদৃশ দোলনা বিশেষ)।
এগুলি ছাড়াও কেনা কাটার সময় আপনি এক বা একাধিক কাজু বাদামের প্যাকেট অথবা পোর্ট ওয়াইন (মাদক দ্রব্য) কিনতে পারেন। গোয়ার সবথেকে উল্লেখযোগ্য আকর্ষণ হল “ফেনী” – কাজুবাদাম দ্বারা তৈরি এক মাদক দ্রব্য, সাম্প্রতিক কালে যেটি গোয়ায় খুবই বিখ্যাত। বহ ভারতীয় ডিজাইনাররা গোয়ায় তাদের নিজস্ব বুটিক খুলেছেন যা আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। এখানকার চমৎকার নকশা আপনাকে পাগল করে দেবে। গোয়ায় কিছু পুরাতন আর্ট গ্যালারী আছে যেখানে শিল্প-প্রেমীরা ভারতীয় চিত্রকলা এবং প্রাচীন সংগ্রহের সন্ধানে যায়। আপনি গোয়ার যেকোন স্থানে কেনাকাটা করতে পারেন। সমগ্র রাজ্যে প্রচুর সরকারি এম্পোরিয়া এবং ব্যাক্তিগত দোকান আছে। মাপুসার ফ্রাইডে মার্কেট এবং অঞ্জুনার ওয়েডনেসডে মার্কেট এখন অত্যন্ত বিখ্যাত। রঙিন সৈকতের পার্শ্ববর্তী স্টল গুলি গোয়ায় কেনাকাটার জন্য বিশেষ করে শামুখ এবং পাথরের কারুশিল্প, শুকনো মাছ এবং মশলা কেনাকাটার জন্য এখানকার মানুষদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয়।
হোটেল
গোয়ায় প্রচুর হোটেল এবং রিসর্ট থাকায় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন গন্তব্য। গোয়ায় রিসর্ট এবং হোটেলের প্রচুর আধিক্য থাকায় যে কোন ব্যক্তি এখানে নিজের বাজেট অনুযায়ী পছন্দসই হোটেল বেছে নিতে পারেন। গোয়ার রিসর্টগুলি পর্যটকদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয়। এখানকার হোটেল এবং রিসর্টগুলি পর্যটকদের প্রতিটি চাহিদা মেটানোর জন্য খুব ভালো ভাবে সুসজ্জিত ও সুপরিকল্পিত। যাইহোক, আপনি যদি অগ্রিম হোটেল কক্ষ বুক না করে রাখেন তাহলে এখানে হোটেল কক্ষ পাওয়া খুবই জটিল কাজ। এই রাজ্যের ভাল রেস্তোরাঁর কোন অভাব নেই যেগুলি সুস্বাদু মানের গোয়ানিস্ খাদ্য পরিবেশনের জন্য বিখ্যাত।
* সর্বশেষ সংযোজন : ০৬ - ই আগস্ট, ২০১৫
|