মধ্য প্রদেশ মানচিত্র

Madhya Pradesh Map in Bengali

মধ্য প্রদেশ মানচিত্র
* প্রধান সড়ক, রেলপথ, নগর, জেলা সীমানা ইত্যাদি এই মানচিত্রে দেখানো হয়েছে।

মধ্য প্রদেশের উপর তথ্যাবলী

আধিকারিক ওয়েবসাইট www.mp.nic.in
স্থাপনের তারিখ 1 নভেম্বর, 1956
আয়তন 308,244 বর্গ কিলোমিটার
ঘনত্ব 236/ বর্গ কিলোমিটার
জনসংখ্যা(2011) 72,626,809
পুরুষ জনসংখ্যা(2011) 37,612,306
মহিলা জনসংখ্যা(2011) 35,014,503
জেলার সংখ্যা 51
রাজধানী ভূপাল
নদীসমুহ নর্মদা, তাপ্তি, কেণ, বেতওয়া, শোণ, চম্বল
অরণ্য ও জাতীয় উদ্যান বান্ধবগড় জাতীয় উদ্যান, কানহা্ জাতীয় উদ্যান, পেঞ্চ জাতীয় উদ্যান, খেওনি জাতীয় উদ্যান
ভাষা পাঞ্জাবি, মালভি, নিমাড়ি, পাঞ্জাবি, ভিলোড়ি, গোন্ডি, কোরকু, কালতো, নিহালি
প্রতিবেশী রাজ্য মহারাষ্ট্র, গুজরাট, রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, ছত্তীসগঢ়
রাষ্ট্রীয় পশু জলাভূমির হরিণ
রাষ্ট্রীয় পাখি প্যারাডাইস ফ্লাই-ক্যাচার
রাষ্ট্রীয় বৃক্ষ বটগাছ
রাজ্যের অভ্যন্তরীণ মূল উৎপাদন (2011) 32222
সাক্ষরতার হার (2011) 82.91%
প্রতি 1000 জন পুরুষে মহিলার সংখ্যা 930
বিধানসভা নির্বাচনক্ষেত্র 230
সংসদীয় নির্বাচনক্ষেত্র 29

মধ্যপ্রদেশ সর্ম্পকে

দেশের কেন্দ্রীয় অংশে অবস্থিত, ভূমি দ্বারা বেষ্টিত মধ্যপ্রদেশ, উত্তর-পশ্চিম দিকে রাজস্থান রাজ্য, উত্তরে উত্তর-প্রদেশ, দক্ষিণে মহারাষ্ট্র, পূর্বে ছত্তীসগঢ় এবং পশ্চিমে গুজরাট দ্বারা সীমান্তবর্তী রয়েছে। ২০০০ সালের ১-লা নভেম্বর ছত্তীসগঢ় মধ্যপ্রদেশ থেকে বিছিন্ন হওয়ার আগে পর্যন্ত মধ্যপ্রদেশ, দেশের সবচেয়ে বৃহত্তম রাজ্য হিসাবে গৌরব লাভ করেছিল।

মধ্যপ্রদেশে পর্বত ও সমভূমি সহ একটি মিশ্র ভূ-সংস্থান রয়েছে। রাজ্যে তিনটি প্রধান ঋতু রয়েছেঃ শীতকাল (নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারী), গ্রীষ্মকাল (মার্চ থেকে মে) এবং বর্ষাকাল (জুন থেকে সেপ্টেম্বর)। শীতকালের সময়, গড় তাপমাত্রার পরিমাণ ১০ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড থেকে ২৭ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড (৫০ডিগ্রী থেকে ৮১ডিগ্রী ফারেনহাইট) থাকে। গ্রীষ্মকালে গড় তাপমাত্রা ২৯ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড (৮৫ডিগ্রী ফারেনহাইট) যুক্ত খুবই উষ্ণ হয় এবং তাপমাত্রার পরিমাণ কখনও কখনও ৪৮ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড (১১৮ডিগ্রী ফারেনহাইট) পর্যন্ত পৌঁছে যায়। বর্ষাকালে গড় তাপমাত্রা ১৯ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড থেকে ৩০ডিগ্রী সেন্টিগ্রেডে (৬৬ডিগ্রী থেকে ৮৬ডিগ্রী ফারেনহাইট) নেমে আসে। মধ্যপ্রদেশে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ মোটামুটি প্রায় ১২০০মিলিমিটার (৫০ইঞ্চির কাছাকাছি), যার প্রায় ৯০ শতাংশ বৃষ্টিপাত বর্ষাকালেই হয়। রাজ্যের রাজধানী হল ভূপাল।

মধ্যপ্রদেশের ইতিহাস

মধ্যপ্রদেশের ইতিহাস বিখ্যাত মৌর্য্য সম্রাট অশোকের সময়ে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। মধ্য ভারতের একটি প্রধান অংশ পূর্বে (খ্রীষ্টিয় ৩০০-৫৫০) গুপ্ত সাম্রাজ্যের একটি অংশ ছিল। সপ্তম শতকের প্রথম ভাগে, এই রাজ্য বিখ্যাত সম্রাট হর্ষের রাজত্বের এক অংশ ছিল। দশম শতকের অন্তিম অংশ চরম বিভ্রান্তির সময় ছিল। একাদশ শতকের প্রারম্ভে মুসলিমরা মধ্য ভারতে প্রবেশ করে, এদের মধ্যে গজনীর মেহমূদ ছিলেন প্রথম এবং দ্বিতীয় ছিলেন মহম্মদ ঘোরি যাঁরা কিছু অংশ দিল্লীর সুলতানের রাজত্বে অন্তর্ভূক্ত করেন। মারাঠাদের উথ্থানের সঙ্গে সঙ্গে এটি মোঘল সাম্রাজ্যের একটি অংশ হয়ে ওঠে। ১৭৯৪ খ্রীষ্টাব্দে মাধোজী সিন্দিয়ার মৃত্যুর পর, মধ্য ভারতের আধিপত্য মারাঠাদের অধীনে চলে আসে, কিন্তু স্বাধীনতার পর এটি একটি ছোট্ট রাজ্য রূপে গড়ে ওঠে। এই বিচ্ছিন্ন ছোট্ট রাজ্যটি ব্রিটীশ সার্বভৌমত্বে ছেয়ে যায়। এই অঞ্চলের কিছু মহান নারী শাসক যেমন ইন্দোরের রাণী আহিল্যাবাঈ হোলকার, গন্ডো-র মহারাণী রাণী কমলাদেবী এবং রাণী দূর্গাবতী ইতিহাসে তাদের নিজেদের নাম খোদাই করে রেখেছেন।

১৯৪৭ সালে ভারত যখন স্বাধীনতা পায়, ব্রিটিশ ভারতীয় প্রদেশের কেন্দ্রীয় প্রদেশ ও বেরার নিয়ে মধ্যপ্রদেশ গঠিত হয়েছিল। সীমানা পরিবর্তন অনুসরণ করা হয় এবং অবশেষে ছত্তীসগঢ় রাজ্যটিকে মধ্যপ্রদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়।

জনসংখ্যা

মধ্যপ্রদেশ ভারতবর্ষের হৃদয়ের ঠিক মাঝখানে অবস্থিত। এম.পি নামেও পরিচিত, রাজ্যটি ৩,০৮,২৪৪ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজ্য হিসাবে গড়ে উঠেছে। ভূপাল মধ্যপ্রদেশের রাজধানী। ইন্দোর, রাজ্যের বৃহত্তম শহর রূপে গঠিত, অন্যদিকে জব্বলপুর এই রাজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র। জনসংখ্যার দিক থেকে মধ্যপ্রদেশ ভারতের ষষ্ঠ বৃহত্তম রাজ্য। এটি উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্র, ছত্তীসগঢ়, গুজরাট এবং রাজস্থানের সঙ্গে তার সীমানা ভাগ করে নিয়েছে।

ভৌগোলিক অবস্থান

ভারতের এই রাজ্যটির ভৌগোলিক অবস্থানের মধ্যে প্রধানত পৃথিবীতে তার অবস্থান, এলাকা এবং এলাকা ভিত্তিক বিভাগ, নদী, আবহাওয়া, মৃত্তিকা, ফসল, ভূসংস্থান ও পাশাপাশি তার উদ্ভিদ ও প্রাণীকূলও অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। ২২.৪২ ডিগ্রী উত্তর এবং ৭২.৫৪ ডিগ্রী পশ্চিমে তার ভৌগোলিক অবস্থান সহ, মধ্যপ্রদেশ কেন্দ্রীয় ভারতে অবস্থান করছে। রাজ্যটি উত্তর পূর্ব দিকে উত্তর প্রদেশ, উত্তর পশ্চিম দিকে রাজস্থান, পশ্চিমে গুজরাট, দক্ষিণ পূর্বদিকে ছত্তীসগঢ় এবং দক্ষিণ দিকে মহারাষ্ট্রের সঙ্গে তার সীমানা ভাগ করে নিয়েছে।

শিক্ষা

মধ্যপ্রদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা খুবই উন্নত। মধ্যপ্রদেশের সমস্ত বিদ্যালয় স্তরের শিক্ষা তিনটি বিভাগে বিভক্ত রয়েছে- প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা। মধ্যপ্রদেশে পলিটেকনিক, শিল্পকলা ও চারুকলা, সঙ্গীত ইত্যাদির জন্যও বিদ্যালয় রয়েছে। এছাড়াও, এখানে ১২-টি রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এই কারণেই রাজ্যের জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ শিক্ষিত। উজ্জয়িন এবং সাগরে অবস্থিত ভারতের পশ্চিমাঞ্চলের সবচেয়ে প্রাচীনতম এবং সুন্দর বিদ্যালয় রয়েছে যা শিক্ষার উচ্চস্তরীয় মানের জন্য সু্প্রসিদ্ধ। সম্প্রতি, মধ্যপ্রদেশে বিদ্যালয় এবং মহাবিদ্যালয় শিক্ষাগ্রহণ থেকে পিছিয়ে পড়া মানুষদেরকে প্রভাবিত করতে এবং তাদেরকে আবার পড়াশোনার সুযোগ দিতে এখানকার শিক্ষা ব্যবস্থায় বিভিন্ন কর্মশালা এবং প্রশিক্ষন শিবির চালু করা হয়েছে।

ভাষা

যেহেতু মধ্যপ্রদেশ ‘ভারতর হৃদয়’ রূপে চিহ্নিত, তাই এটি খুবই স্পষ্ট যে সমস্ত ভাষাগুলির মধ্যে হিন্দিই আঞ্চলিক উপভাষাগুলির নিয়ন্ত্রক হিসাবে গড়ে উঠেছে। এটি প্রধানত ভারতের উত্তর ও মধ্য ভাগে বসবাসকারী অধিবাসীদের দ্বারা প্রচলিত। বস্ত্তত, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক হিন্দি ভাষা একটি সরকারি ভাষা রূপে তার মর্যাদায় উন্নীত হয়েছে। দেবনগরী লিপি, ফার্সী-আরবী লিপির সঙ্গে মিলেমিশে হিন্দিকে লিখন-যোগ্য করে তোলে। হিন্দি ভাষা ভারত ছাড়াও পাকিস্তান, নেপাল ও ফিজি-তে প্রচলিত আছে।

অর্থনীতি ও পরিকাঠামো

মধ্যপ্রদেশের অর্থনীতির ভিত হল কৃষি। অর্ধেকের চেয়ে একটু কম প্রায় সমস্ত জমিই চাষের উপযুক্ত; তবে ভূ-সংস্থান, বৃষ্টিপাত ও মৃত্তিকার অনমনীয়তার দরুণ এখানকার বন্টন বেশ খানিকটা অসমান। এখানকার প্রধান চাষের উপযোগী এলাকা লক্ষ্য করা যায় চম্বল উপত্যকা, মালওয়া মালভূমি, রেওয়া মালভূমি এবং ছত্তীসগঢ় সমভূমিতে। আরোও একটি উর্বর জমি হল, নদীবাহিত পলি দিয়ে আবৃত নর্মদা উপত্যকা। প্রধান গুরুত্বপূর্ণ ফসলগুলি হল ধান, গম, সরঘুম (জোয়ার), কর্ন (ভূট্টা), ডাল (শিমজাতীয় ডাল যেমন মটর, বিনস) এবং চীনাবাদাম (বাদাম)। পূর্বদিকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশী হওয়ায় এখানে ধানের ফলন বেশী হয়, অন্যদিকে পশ্চিমী মধ্যপ্রদেশে গম ও জোয়ারের ফলন গুরুত্বপূর্ণ। সোয়াবিন উৎপাদনে এই রাজ্য ভারতের মধ্যে সর্ব্বোচ্চ। অন্যান্য ফসলগুলি হল তিসি, তিল, আখ এবং তুলা, পাশাপশি পার্বত্য এলাকায় বেড়ে ওঠা নিকৃষ্টমানের ভূট্টার চাষও হয়। আফিম (রাজস্থানের নিকটবর্তী, মান্দসৌর-এর পশ্চিমী জেলা) এবং গাঁজা (খান্ডওয়া-র দক্ষিণ-পশ্চিমী জেলা [পূর্ব নিমার]) উৎপাদনের ক্ষেত্রে এক বৃহত্তম উৎপাদক হিসাবে এই রাজ্যর নাম রয়েছে।

সমাজ ও সংস্কৃতি

মধ্যপ্রদেশে অন্তত চারটি কৃষিজ-জলবায়ু অঞ্চল রয়েছে, এবং তাই এখানকার মানুষদের ও তাদের জীবন যাপন ধরনের মধ্যে একটি আকর্ষণীয় মিশ্রন দেখা যায়। ভারতের মোট উপজাতি জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ এই রাজ্যে বাস করে। এই রাজ্যের মধ্যে তিনটি স্বতন্ত্র উপজাতীয় সমষ্টি রয়েছে।

একটি বৃহৎ অংশ গন্ডোদের দ্বারা গঠিত, যারা একসময় রাজ্যের এক প্রধান অংশে শাসন করত এবং যাকে পরে রাজ্যের কেন্দ্রীয় অংশে গন্ডোয়ানা নামে পরিচিতি দেওয়া হয়। মধ্যপ্রদেশের পশ্চিমী অংশ একটি বর্ণময় যোদ্ধা এবং শিকারিদের সমষ্টিগত ভিল অধিবাসীদের নিয়ে গঠিত। মধ্যপ্রদেশের পূর্ব অংশ ওঁরাও-দের অধীনে রয়েছে, যাদের অধিকাংশই বর্তমানে খ্রীষ্টানে পরিণত হয়েছে। যদিও মারাঠীতেও অনেকে কথা বলে, তবে হিন্দিই কথ্য ভাষা রূপে এখানে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত। উর্দূ, ওড়িয়া, গুজরাটি এবং পাঞ্জাবি-তেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ কথা বলে। ভিলরা ভিলি ভাষায় এবং গন্ডোরা, গোন্ডি ভাষায় কথা বলে।

গন্ডো, ভিল ও বানজারা-দের মধ্যে বিভিন্ন প্রকারের স্পন্দনশীল উপজাতি নৃত্য রয়েছে যেমন ফাগ (একটি তলোয়ার নৃত্য), লোটা (মাথায় জলপূর্ণ কলসী নিয়ে মহিলাদের দ্বারা নৃত্য) এবং অন্যান্য রণপা নৃত্য। বস্ত্রশিল্প গুরুত্বপূর্ণ হলেও মধ্যপ্রদেশে একটি শক্তিশালী ঐতিহ্যময় গ্রাম্য হস্তশিল্প ও কারুকার্য শিল্প রয়েছে। এখানকার চান্দেরী তাঁত এবং মাহেশ্বর পশমের বিশেষ চাহিদা রয়েছে। উপজাতি অধিবাসীরা আকর্ষণীয় হস্তশিল্প তৈরী করে। রাজ্যের উত্তরদিকে ছত্তরপুর জেলায় অবস্থিত খাজুরাহো মন্দিরের মধ্যে যৌন আবেদনময়ী কারুকার্যের জন্য এটি বিশ্বজুড়ে বিশেষভাবে সুপরিচিত। সহস্র খ্রীষ্টাব্দের সময়কালে এগুলি চান্ডেলা রাজাদের দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। গোয়ালিয়র এবং এর কাছকাছি মন্দিরগুলিও উল্লেখযোগ্য।

সরকার ও রাষ্ট্রনীতি

মধ্যপ্রদেশ রাজ্যটি ৫১-টি জেলা নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এলাকার ভিত্তিতে, রাজস্থানের পর এটিই ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজ্য। মধ্যপ্রদেশ সরকার একটি নির্বাহী, সংসদীয় এবং বিচার বিভাগীয় বিভাগ নিয়ে গঠিত। সরকারের কার্যনির্বাহী শাখা রাজ্যের রাজ্যপালের নেতৃত্বে চালিত হয়। দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলির ন্যায়, রাজ্যের প্রধান ব্যক্তি হলেন রাজ্যপাল। কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে আলোচনার মাধ্যমে দেশের রাষ্ট্রপতি দ্বারা তিনি মনোনীত হন। রাজ্যপালের অবস্থান প্রধানত নিরপেক্ষ।

পরিবহন

মধ্যপ্রদেশের প্রধান অংশগুলি বাস এবং রেল পরিষেবা দ্বারা আচ্ছাদিত। সড়ক সংযোগ অনেক জাতীয় সড়কের সাথে সংযুক্ত যা রাজ্যটিকে ভারতের অন্যান্য রাজ্যগুলির সঙ্গে সু-সংযুক্ত করে রেখেছে। ভারতীয় রেলের কেন্দ্রীয়-পশ্চিম রেলপথ অঞ্চলের সদর দপ্তর এই রাজ্যের জব্বলপুরে অবস্থিত। এখানে চারটি আন্ত-রাজ্য বাস টার্মিনাল গোয়ালিয়র, ইন্দোর, ভূপাল এবং জব্বলপুরে রয়েছে। প্রায় ২০০০ বাস এই শহরগুলির মধ্যে দৈনন্দিন চলাচল করে। মধ্যপ্রদেশের ব্যস্ততম বিমানবন্দরটি ইন্দোরে অবস্থিত। রাজ্যের অন্যান্য বিমানবন্দরগুলি হল জব্বলপুর বিমানবন্দর, গোয়ালিয়র বিমানবন্দর, ভূপালে অবস্থিত রাজা ভোগ বিমানবন্দর এবং খাজুরাহো বিমানবন্দর।

মধ্যপ্রদেশের পর্যটন

মধ্যপ্রদেশ আক্ষরিক অর্থেই ভারতের ‘হৃদয়’। এই রাজ্যের পর্যটনের অর্থ হল ভারতের একটি ঐন্দ্রজালিক এবং রহস্যময় কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে যাত্রা করা। মধ্যপ্রদেশ পর্যটন অনেক মিনার, আকর্ষণীয় স্থাপত্য মন্দির, দূর্গ এবং রাজপ্রাসাদকে আলোকিত করেছে যা মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের কেন্দ্রবিন্দু। পর্যটন রাজ্যের অনিবার্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে আচ্ছাদিত রয়েছে। ভূ-সংস্থানগত সুন্দর ভূমি হল প্রধানত মালভূমি এবং এই মালভূমিটি অত্যাশ্চর্য পর্বত শৃঙ্গ, কোলাহলপূর্ণ নদী, আঁকাবাঁকা সরু নদী এবং মাইলের পর মাইল ধরে ঘন, গহন জঙ্গল দ্বারা আচ্ছাদিত।

বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য এবং জাতীয় উদ্যান

বন্যপ্রাণী পর্যটনের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রদেশ জুড়ে বিভিন্ন বন্যপ্রাণী সংরক্ষিত অরণ্য এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র গঠন করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী পর্যটন প্রকৃতপক্ষে দর্শকদের আনন্দ দান করে এবং এটি বন্যপ্রাণী সম্পদ উপলব্ধিরও একটি দিক নির্নয় করে। মধ্যপ্রদেশ বন্যপ্রাণী পর্যটন প্রধানত পরোক্ষভাবে একটি ছোট দিক যেখানে জাতীয় অরণ্যে পশুরা তাদের প্রকৃত বাসস্থান ও জীবনযাপন এবং ইচ্ছেমত অবাধ বিচরণ করে। এই সংরক্ষিত অরণ্যগুলি, প্রকৃত অরণ্যের সদৃশ নয়; এগুলি মানুষের কৃত্রিম তৈরি; তবুও সেগুলি পর্যটকদেরকে প্রকৃত অরণ্যের স্বাদ দিতে পারে।

মধ্যপ্রদেশ-এর হোটেল

মধ্যপ্রদেশ ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্যস্থল। রাজ্যে প্রচুর হোটেল রয়েছে যেগুলির পরিসীমা ঐতিহ্য মাফিক থেকে পাঁচ তারকা এবং বাজেট হোটেল। মধ্য প্রদেশের হোটেলগুলি বিশ্ব মানের সুবিধাযুক্ত এবং সেবার জন্য সারা দেশের মধ্যে তুলনীয়।

উৎসব

ভারতের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য তার সমস্ত রাজ্যের অনেক মেলা ও উৎসবের উদযাপনের পথকে প্রশস্ত করেছে। মধ্যপ্রদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। এখানকার মেলা এবং উৎসবগুলি চরমভাবে জনপ্রিয় কারণ সেখানে ভারতীয় অধিবাসীরা তাদের গ্রাম্য অঞ্চলের বাস্তব সাংস্কৃতিক মানকে প্রদর্শন করে। এই মেলা এবং উৎসবগুলি কোনও একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় কিন্তু সেগুলি সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষদের দ্বারা পালিত হয়। মধ্যপ্রদেশের মেলা ও উৎসবগুলি হাজার হাজার মানুষকে আকৃষ্ট করে যার দ্বারা এই উপজাতীয় মেলা ও উৎসবগুলিতে আপনি ভারতের উপজাতীয় ধর্মানুষ্ঠান এবং ঐতিহ্য প্রতক্ষীকরণের সুযোগ পেতে পারেন।

* সর্বশেষ সংযোজন : ১২- ই মার্চ, ২০১৫