দাদরা ও নগর হাভেলি মানচিত্র

Dadra and Nagar Haveli Map in Bengali

দাদরা ও নগর হাভেলি মানচিত্র
* দাদরা ও নগর হাভেলি মানচিত্রে সেখানকার জাতীয় সড়ক, প্রধান সড়ক, জেলা সদর দপ্তর ইত্যাদি তুলে ধরা হয়েছে৷

দাদরা ও নগর হাভেলির উপর তথ্যাবলী

আধিকারিক ওয়েবসাইট www.dnh.nic.in
স্থাপনের তারিখ 11 আগস্ট, 1961
আয়তন 491 বর্গ কিলোমিটার
ঘনত্ব 698/ বর্গ কিলোমিটার
জনসংখ্যা (2011) 343,709
পুরুষ জনসংখ্যা(2011) 193,760
মহিলা জনসংখ্যা(2011) 149,949
জেলার সংখ্যা 1
রাজধানী সিলভাসা
নদীসমূহ গঙ্গা নদী
অরণ্য ও জাতীয় উদ্যান লায়্যন সাফারি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, ডিয়্যার পার্ক-সিলভাসা
ভাষা ইংরাজী, গুজরাটি, হিন্দি, মারাঠি
প্রতিবেশী রাজ্য গুজরাট, মহারাষ্ট্র, দমন ও দিউ
সাক্ষরতার হার (2011) 86.34%
প্রতি 1000 জন পুরুষে মহিলার সংখ্যা 775
বিধানসভা নির্বাচনক্ষেত্র 0
সংসদীয় নির্বাচনক্ষেত্র 1

দাদরা ও নগর হাভেলি সম্পর্কে

দাদরা ও নগর হাভেলি, ভারতের একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। এটি পশ্চিম উপকূলে অবস্হিত এবং দুটি পৃথক অংশ নিয়ে গঠিত। দাদরা, গুজরাট রাজ্যটি দ্বারা বেষ্টিত এবং নগর হাভেলি, মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের সীমান্তে অবস্হিত।

দাদরা ও নগর হাভেলি সম্পর্কে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য। ঘন সবুজ বন, আঁকাবাঁকা নদী, দূরবর্তী পর্বত মালা এবং মহৎ বিচিত্র প্রকৃতির উদ্ভিদ ও প্রাণীকুল এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক। ভারতীয় উপ-মহাদেশের পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটি গুজরাট ও মহরাষ্ট্রের মধ্যে অবস্থান করছে। প্রায় ৪৯১ বর্গ কিলোমিটার এলাকা সহ এই জায়গার সবচেয়ে আকর্ষণীয় উপাদান, এই অঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত দমন গঙ্গার জলবিভাজিকায় এর অবস্থান।

দাদরা ও নগর হাভেলি ১৭৭৯ খ্রীষ্টাব্দ থেকে পর্তুগীজদের এক উপনিবেশ ছিল এবং ১৯৫৪ সালে এটি ভারতের একটি অংশ হয়ে ওঠে। ১৯৬১ সাল পর্যন্ত এটি স্বতন্ত্রভাবে পরিচালিত হত এবং একটি স্বরাজ্য ছিল। সেই বছরেই এটি ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হয়ে ওঠে এবং বর্তমানে এটি ভারতীয় সংসদের উভয় কক্ষেই প্রতিনিধিত্ব করে।

এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটির প্রধান নগরগুলি হল দাদরা ও সিলভাসা। এছাড়াও সিলভাসা এখানকার রাজধানী।

দাদরা ও নগর হাভেলির পূর্বদিকে পশ্চিম ঘাট এবং এর উত্তর ও পূর্ব দিকে গুজরাটের জেলাগুলি অবস্হিত রয়েছে, অন্যদিকে এর দক্ষিণ সীমান্তে মহারাষ্ট্রের জেলাগুলি অবস্থান করছে।

দাদরা ও নগর হাভেলির উত্তর-পূর্বদিকে পশ্চিম ঘাটের উপস্থিতির জন্য এই ভূখন্ড কিছুটা পাহাড়ী কিন্তু মধ্যভাগ ভূখন্ডের বেশিরভাগই উর্বর সমভূমি।

দাদরা ও নগর হাভেলি ১-টি জেলা, ১-টি ব্লক ও ৭২-টি গ্রাম নিয়ে গঠিত এবং ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী এখানকার জনসংখ্যা হল ৩,৪৩,৭০৯ জন। দাদরা ও নগর হাভেলি সম্পর্কে গভীরতর গবেষণা করলে জানা যায় যে-এই অঞ্চলে ভার্লি, কোকানা, ধোড়িয়া ও দাবলা সহ বেশ কিছু উপজাতি রয়েছে। এই উপজাতি মানুষেরা স্বতন্ত্র ও আত্মনির্ভর এবং তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও সামাজিক জীবনধারা রয়েছে।

দাদরা ৩-টি গ্রাম নিয়ে গঠিত এবং নগর হাভেলি সিলভাসা শহর ও ৬৮-টি গ্রাম নিয়ে গঠিত। ঘন সবুজ বন, আঁকাবাঁকা নদী ও সুবিশাল উদ্ভিদ ও প্রাণীকুলে সমৃদ্ধ, এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটি সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন স্থল হয়ে উঠেছে।

নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত এই অঞ্চলটি এক আরামপ্রদ জলবায়ু উপভোগ করে এবং এটিই এখানে ঘুরতে যাওয়ার উপযুক্ত সময়। সমুদ্র তীরবর্তী হওয়ার দরুণ, গ্রীষ্মকালেও এই তাপমাত্রা খুব বেশী হয় না এবং রাত্রিতে আবহাওয়াও খুবই মনোরম। দক্ষিণ-পশ্চিমী বর্ষা জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত থাকে। এই সময়ে এই অঞ্চলে অঢেল বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ সেন্টিমিটার।

ইতিহাস

১৭৮৩ থেকে ১৭৮৫ পর্যন্ত পর্তুগীজদের নিয়ন্ত্রণে আসার আগে দাদরা ও নগর হাভেলি মারাঠাদের অধীনে ছিল। ১৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এখানে পর্তুগীজরা রাজত্ব করে। ১৯৫৪ সালে ভারতীয় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল পর্তুগীজদের ভারত ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করে। ১৯৬১ সালে এটি একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হয়ে ওঠে।

ভৌগোলিক অবস্থান

ভৌগোলিক দিক দিয়ে এটি ২০ ডিগ্রী ২৫’’ উত্তর এবং ৭৩ ডিগ্রী ১৫’’ পূর্ব দিকে অবস্থান করছে। এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটি দেশের পশ্চিম দিকে গুজরাট ও মহারাষ্ট্রের মধ্যবর্তী এলাকায় অবস্থিত। এই ক্ষেত্রটি দমন গঙ্গার জলবিভাজিকায় অবস্থান করছে। দাদরা ও নগর হাভেলির মোট আয়তন হল প্রায় ৪৯১ বর্গ কিলোমিটার। মোট এলাকার প্রায় ৪০ শতাংশ ভূ-খন্ড ঘন অরণ্যে আবৃত রয়েছে। সাধারণ লাজুক প্রকৃতির প্রফু্ল্লিত ও আনন্দময় আদিবাসীদের এটি মাতৃভূমি যারা তাদের লোকসঙ্গীত ও স্পন্দনশীল জীবনধারায় এই অঞ্চল সমৃদ্ধ করেছে। এখানকার অধিবাসীদের অধিকাংশই আদিবাসী, যারা বিভিন্ন উপজাতি সমষ্টিতে বিভক্ত ছিল। তাদের মধ্যে রয়েছে ভার্লি, কোকানা, ধোড়িয়া ও দাবলা। জনসংখ্যার অধিকাংশই হিন্দু সম্প্রদায়ভুক্ত।

আবহাওয়া

দাদরা ও নগর হাভেলির আবহাওয়া মূলত তার ভৌগোলিক অবস্থান দ্বারা খুবই প্রভাবিত হয়। যদিও এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটি ভূমি-আবদ্ধ রয়েছে কিন্তু এটি সমুদ্র থেকে খুব বেশি দূরে নয়। দাদরা ও নগর হাভেলি এক দিক দিয়ে পশ্চিম ঘাট দ্বারা সীমন্তবর্তী রয়েছে, অন্যদিকে এটি গুজরাট ও মহারাষ্ট্রের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থান করছে।

ব্যবসা ও অর্থনীতি

কৃষিই এই রাজ্যের প্রধান জীবিকা। আদিবাসীরা প্রধানত চাল, গম, আখ, ধান, ডাল ও ফলের চাষ করে। এখানে বড় মাপের কোনও শিল্প গড়ে ওঠে নি। এটি কেন্দ্রীয় ভারত সরকার দ্বারা পরিচালিত হয়। এখানকার প্রায় ৪০ শতাংশ ভূমি ঘন অরণ্য দ্বারা আবৃত রয়েছে। বাকি অংশ চাল ও অন্যান্য শস্য চাষের জন্য এবং গৃহপালিত পশুর গোচারণের জন্য রয়েছে। এখানে শিল্পায়নের উন্নতি খুবই সীমিত। এখানকার রাজধানী সিলভাসা, ভিলাড় ও ভাপি থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এখানকার নিকটবর্তী রেলওয়ে স্টেশন পশ্চিম রেলপথের অন্তর্গত ভাপি-তে অবস্থিত যা সিলভাসা থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। এখানকার নিকটবর্তী বিমানবনদর মুম্বাই-তে অবস্থিত।

পরিকাঠামো

দাদরা ও নগর হাভেলি, ভারতীয় উপমহাদেশের একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল যার নিয়ন্ত্রণের দ্বায়িত্বে রয়েছেন ভারতীয় কেন্দ্র সরকার। এইজন্য এখানকার পরিকাঠামোর দ্বায়িত্বেও কেন্দ্র সরকার রয়েছেন। ভারতের রাষ্ট্রপতি একজন প্রশাসক বা “লেফটেনান্ট গভর্নর”-এর নাম প্রস্তাবিত করেন যিনিই এই দাদরা ও নগর হাভেলির প্রধান ব্যাক্তি রূপে গণ্য হন। এখানকার রাজধানী শহর সিলভাসা থেকে দাদরা ও নগর হাভেলির বেশিরভাগ পরিকাঠামোগত কাজকর্ম সঞ্চালিত হয়।

এখানকার সড়ক ও পরিবহন পরিকাঠামো সম্পূর্ণরূপে তার প্রতিবেশী রাজ্য গুজরাট ও মহারাষ্ট্রের রাজ্য পরিবহন ব্যবস্থার উপর নির্ভর করে রয়েছে।

জনসংখ্যা

২০১১ সালের সম্পাদিত জনগণনা অনুযায়ী, দাদরা ও নগর হাভেলির জনসংখ্যা হল ৩,৪৩,৭০৯ জন। দশকীয় আদমশুমারির তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে যে, এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটি ভারতের মধ্যে ৫৫.৫ শতাংশ সহ সর্বোচ্চ জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার প্রমাণ করেছে।

জনসংখ্যা

অবস্থান ভারতের পশ্চিম প্রান্তে মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের মধ্যবর্তী এলাকায় অবস্থিত।
অক্ষাংশ ২০ ডিগ্রী এবং ২০ ডিগ্রী ২৫’’ উত্তর
দ্রাঘিমাংশ ৭২ ডিগ্রী ৫০’’ এবং ৭৩ ডিগ্রী ১৫’’ পূর্ব
আয়তন ৪৯১ বর্গ কিলোমিটার
জলবায়ু শীতকালে শীতল ও গ্রীষ্মকালে উষ্ণ
সর্ব্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড
সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড
বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ২০০ থেকে ২৫০ সেন্টিমিটারের মধ্যে
রাজধানী সিলভাসা
জনসংখ্যা ৩,৪৩,৭০৯
ভাষা গুজরাটি, হিন্দি, মারাঠী, ইংরাজী, ভিলি
ধর্ম হিন্দু, মুসলিম, খ্রীষ্টান ও অন্যান্য সম্প্রদায়
ভ্রমণের জন্য শ্রেষ্ঠ সময় নভেম্বর থেকে মার্চ মাস
পোশাক-পরিচ্ছদ গ্রীষ্মকালে – হালকা সুতি, শীতকালে – পশমীয়

সরকার ও রাষ্ট্রনীতি

ভারতের কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলগুলি সরাসরি ভারত সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং এই গুলিকে “ভারতের উপ-জাতীয় প্রশাসনিক বিভাগ” হিসাবে ঘোষিত করা হয়। দাদরা ও নগর হাভেলি ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং এইজন্য দাদরা ও নগর হাভেলির সরকার ও রাজনীতি ভারতীয় কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা পরিচালিত হয়। ভারতের রাষ্ট্রপতি, দাদরা ও নগর হাভেলির সরকার ও রাজনীতির সভাপতিত্বের জন্য একজন প্রশাসক বা লেফটেনেন্ট গভর্নর-কে নিযুক্ত করেন। এই অঞ্চল দীর্ঘ সময় ধরে পর্তুগিজ শাসনের অধীনে ছিল এবং ১৯৫৪ সালে এটি ভারতীয় উপমহাদেশের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত হয়। তখন থেকে এখানকার সরকার ও রাজনীতি স্বতন্ত্র ও স্বশাসিত।

সমাজ ও সংস্কৃতি

দাদরা ও নগর হাভেলির অধিবাসী, সংস্কৃতি, উৎসব একসঙ্গে একটি বর্ণময় বৈচিত্র্যতার উপস্থাপনা করে। দাদরা ও নগর হাভেলির অধিকাংশ অধিবাসীই ভিন্ন ভিন্ন উপজাতি সমষ্টির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। প্রধান উপজাতিগুলি হল কোকানা, ভার্লি, কোলি, ধোড়িয়া, কাঠোড়ি, নৈকা ও দাবলা। এই উপজাতিগুলির নিজস্ব এক স্বতন্ত্র সংস্কৃতি ও ধর্মীয় রীতিনীতি রয়েছে এবং সম্প্রদায়ের ভিত্তিতে এদের মধ্যে ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। লোক-সংগীত এখানকার বাতাসে ভেসে বেড়ায় কারণ এখানকার মানুষ ও সমাজকে দৃঢ়ভাবে তা প্রভাবিত ও নিয়ন্ত্রিত করে এবং সমাজের মধ্যে প্রত্যাশিত আচরণগত নিদর্শন রূপে কাজ করে। সঙ্গীত ও নৃত্য এই উপজাতি গোষ্ঠীগুলির জীবনে এক অনিবার্য অংশ হয়ে রয়েছে এবং বিভিন্ন উপলক্ষে যেমন ফসল কাটার সময়, বিবাহ ও মৃত্যুর সময় বিভিন্ন প্রকারের সঙ্গীত ও নৃত্যের পরিবেশনা করা হয়। দাদরা ও নগর হাভেলিতে এই উপজাতি গোষ্ঠীগুলি ছাড়াও বিভিন্ন ধর্মের মানুষ বাস করে। তাদের এক স্বতন্ত্র ধর্মীয় রীতিনীতি ও উৎসব-অনুষ্ঠান রয়েছে। যদিও এখানকার অধিকাংশ অধিবাসীই হিন্দু সম্প্রদায়ভূক্ত এবং তারা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯৫ শতাংশ জুড়ে রয়েছে। এই উপজাতিগুলির নিজস্ব ভাষা রয়েছে, যর মধ্যে ভিলি ও ভিলোড়ি হল অতি সাধারণ। আধিকারিক ভাষারূপে ইংরাজী ভাষা ব্যবহৃত হয় এবং গুজরাট ও মহারাষ্ট্রের নিকটবর্তী অঞ্চলে অবস্হিত হওয়ার কারণে হিন্দি, মারাঠি ও গুজরাটি ভাষারও প্রচলন রয়েছে।

কথ্য ভাষা

দাদরা ও নগর হাভেলির প্রধান ভাষাগুলি হল মারাঠি, গুজরাটি, ভিলি এবং ভিলোড়ি।

শিক্ষা

দাদরা ও নগর হাভেলি অঞ্চলটি স্বর্গীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে আশীর্বাদধন্য। এই কেন্দ্রশসিত অঞ্চলটি এক জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র রূপে উদিত হলেও এটি তার শান্ত সৌন্দর্যতাকে বজায় রেখেছে। যদিও সময়ের সাথে সাথে বিভিন্ন কারণে দাদরা ও নগর হাভেলি জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাক্ষী হয়ে আছে। এটি একসময় অনগ্রসর উপজাতি দ্বারা অধ্যুষিত ছিল। পর্যটক ও পাশাপাশি এলাকার মানুষদের প্রবাহে ও প্রভাবে এবং সরকারের প্রচেষ্টার কারণে এখানকার অধিবাসীরা আধুনিক সমাজের মূল স্রোতে আসতে শুরু করেছে। এর ফলে এখানকার শিক্ষার চিত্রপটেও এক চমকপ্রদ উন্নতি হয়েছে। এই কেন্দ্রশসিত অঞ্চলটির শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করার সময়, এই অঞ্চলের আশেপাশের বিভিন্ন শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলির বর্ণনা করা প্রয়োজন।

পর্যটন

সিলভাসায় অবস্থিত উপজাতীয় সাংস্কৃতিক যাদুঘর সেইসমস্ত মানুষদের ঘোরার জন্য একটি আদর্শ স্থান যারা বাস্তবিক কোনও কিছুর অন্বেষণে খুব অলসতা দেখায়। এখানে সুন্দর ধরনের মুখোশ, সঙ্গীতের বাদ্যযন্ত্র, মাছ ধরার উপকরণ এবং জীবনাকার মূর্তি ইত্যাদি রয়েছে। সিলভাসা থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে খানভেল অবস্থিত। খানভেল পর্যন্ত ড্রাইভ করলে, এর রাস্তার দুইপাশে লম্বা বৃক্ষের সারিবদ্ধ দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়। এই ভূ-দৃশ্য, সুন্দর সবুজাভ পাহাড় দ্বারা বেষ্টিত এবং প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য ঘরোয়া ধরনের ঢালু বাগানের মধ্যে কটেজ উপলব্ধ রয়েছে। শান্ত ও মৃদু সাকারতোড় নদী এই খানভেল-এর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

রাজধানী সিলভাসা থেকে ৫ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত বনগঙ্গা হ্রদ এবং আইল্যান্ড গার্ডেন হল খুবই সুন্দর লেক গার্ডেন। পুরনো কাঠের তৈরী সেতু, ফুল, পদচারণযোগ্য রাস্তা, খড়ের কূটির, প্যাডেল বোট – সমস্ত কিছু মিলিয়ে এটি মধুযামিনী দম্পতিদের জন্য একটি আদর্শ স্থান হয়ে উঠেছে।

খানভেল থেকে ২০ কিলোমিটার দূরত্বে দুধনী অবস্থিত, দমন গঙ্গা নদীর বিশাল সন্নিহিত সরোবর, মধুবন বাঁধের উপর জলোচ্ছাস একটি সুন্দর দৃশ্য প্রদান করে। তীরবর্তী এলাকার বিলাসবহুল শিবির গ্রামীণ এলাকার খুব ভালো অনুভূতি প্রদান করে। পর্যটকেরা এই শিবিরের কাছাকাছি স্থানে নিজেরা খাবার রান্নাও করতে পারে। সিলভাসা-দাদরা সড়কের মাঝখানে এক জায়গায় হিরওয়া বন নামের একটি সুন্দর বাগান রয়েছে যেখানে সগর্জন জলপ্রপাত রয়েছে। এছাড়াও এখানে কুয়াশাচ্ছন্ন ঝরনা, গ্রামীণ প্রস্তরদ্বার, যমজ স্তম্ভ, ক্ষুদ্র শামিয়ানা এবং পুষ্প উপত্যকা সহ সুন্দর উন্মুক্ত স্থান রয়েছে।

সিলভাসায় অবস্থিত বনধারা উদ্যান হল সুন্দর মন্ডপে ঘেরা প্রসারিত উন্মুক্ত স্থান সহ নদীতীরবর্তী একটি উদ্যান, যা পিকনিকের জন্য একটি আদর্শ স্থান। এছাড়াও সিলভাসাতে একটি ছোট চিড়িয়াখানা এবং শিশু উদ্যানও রয়েছে। দোলনা, স্লাইড, নাগরদোলাসহ রঙীন পাখি, দুষ্ট হনুমান, বিশাল অজগর এবং নিদ্রাচ্ছন্ন কুমীরদের উপস্হিতি যেকোনও বাচ্চার স্বপ্ন সত্যি করতে বাধ্য।

পরিবহন

৮- নং জাতীয় সড়ক বা পশ্চিমী এক্সপ্রেস মহাসড়ক এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটির নিকটবর্তী হওয়ায়, এটি ভারতের প্রধান শহরগুলি যেমন দিল্লী, মুম্বাই ও বরোদার সঙ্গে এই অঞ্চলটিকে যুক্ত রেখেছে। দাদরা ও নগর হাভেলির নিকটবর্তী ভাপি রেলওয়ে স্টেশনের মাধ্যমে, নিম্নলিখিত এই রেলগুলির দ্বারা সহজেই এখানে পৌঁছানো যায় –

  • রাজধানী এক্সপ্রেস
  • শতাব্দী এক্সপ্রেস
  • কর্ণাবতী এক্সপ্রেস

সর্বশেষ সংযোজন : ২৫- শে ফেব্রুয়ারী, ২০১৫